• বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১৪ অপরাহ্ন

চলে গেলেন দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ ড. বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর

আপডেটঃ : সোমবার, ২৩ মার্চ, ২০২০

 

জিসান আহমেদ নান্নু, কচুয়া ॥
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি’র বড় ভাই ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক, জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য, বিশিষ্ট লেখক, চিত্রসমালোচক, দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ড. বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর (৮৪) না ফেরার দেশে চলে গেছেন (ইন্না লিল্লাহি……রাজিউন)। তিনি সোমবার পৌনে ১২ টায় ঢাকার গুলশানে নিজ বাসভবনে বার্ধ্যক্যজনিত কারণে মৃত্যু বরন করেন। মৃত্যুকালে তিনি ১ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ওই দিন বাদ আছর তাঁর নিজ গ্রামের বাড়ী চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার গুলবাহার আশেক আলী খান স্কুল ও কলেজ মাঠে জানাজা শেষে গুলবাহার খান বাড়ীর পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়। মরহুমের জানাজায় এলাকার কয়েক শতাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন আলমগীর এমপি ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক ড.সেলিম মাহমুদ, কচুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আইয়ুব আলী পাটওয়ারী, সাধারন সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী সোহাগ, পৌর মেয়র নাজমুল আলম স্বপন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মাহবুব আলম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা খানম, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. হেলাল উদ্দিন, কাদলা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম লালু, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপকি আকতার হোসেন সোহেল ভূঁইয়া, গুলবাহার আশেক আলী খান উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান, কাদলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা যুবলীগের সদস্য নুরেই আলম রিহাত, উপজেলা ছাএলীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. সোহাগ উদ্দিন শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।
পেছনের কথা: তিনি ১৯৩৬ সালের ৯ জানুয়ারী তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার গুলবাহার গ্রামে জম্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম আশেক আলী খান এবং মাতার নাম সুলতানা বেগম। তিনি ১৯৫০ সালে ঢাকা সরকারি মুসলিম হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৫২ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে ১৯৫৫ সালে স্নাতক এবং ১৯৫৬ সালে স্নাতকোত্তর সম্মান অর্জন করে। সত্তরের দশকে তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড যান এবং সেখানে ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মজীবন: বোরহান উদ্দীন খান কর্মজীবন শুরু করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করে। পরে তিনি এই বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এই বিভাগের অধ্যাপকের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন এছাড়া তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
সাহিত্য জীবন: বোরহান উদ্দীন খানের সাহিত্য জীবন শুরু হয় তার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে। সেই সময়ে তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। ১৯৫০ সালে প্রকাশিত নতুন কবিতা কাব্য সংকলনের সর্বকনিষ্ঠ কবি ছিলেন তিনি। এই সংকলনে অন্য কবিরা ছিলেন পঞ্চাশের অন্যতম কবি শামসুর রাহমান, হাসান হাফিজুর রহমান, ও আলাউদ্দিন আল আজাদ। ১৯৮৩ সালে ডানা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় তার প্রবন্ধ সংকলন মাইকেলের জাগরণ ও অন্যান্য প্রবন্ধ। এতে ১০টি প্রবন্ধ রয়েছে। এই প্রবন্ধের মূল বিষয়বস্তু ছিল মাইকেল মধুসূদন দত্তের আধুনিকতায় উত্তরণ, তার ভাষাশৈলী, দর্শন এবং সাহিত্যের মূল্যায়ন। ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত হয় তার কবিতার বই আমাদের মুখ। কবি শামসুর রাহমান তার এই কাব্যগ্রন্থ প্রসঙ্গে বলেন, “তার কবিতা সকলের কবি থেকে আলাদা এবং তার কবিতায় তার নিজের উপস্থিতি বিদ্যমান।” ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত হয় তার লেখা মানুষের বুকের মধ্যে কাব্যগ্রন্থ। এই গ্রন্থে ৪০টি কবিতা রয়েছে ২০০৭ সালে প্রকাশিত হয় এলুয়ার যেমন ভাবতেন। এই কাব্যগ্রন্থে ৩৩টি কবিতা রয়েছে।
পুরস্কার: তিনি ১৯৬৯ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার, ১৯৮৬ সালে ইউনেস্কো ও ফ্রান্স কর্তৃক ফল অব অনার, ২০০৫ সালে কলকাতার মুজাফফর আহমেদ স্মৃতি পুরস্কার ও ২০০৯ সালে শিক্ষা ও গবেষনায় বিশেষ অবদান রাখায় একুশে পদক পুরস্কার গ্রহন করেন।।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

ফেসবুকে মানব খবর…