সফিকুল ইসলাম রিংকু:-
মতলব জেবি পাইলট গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. কবির হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যাপক ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কবির হোসেন এ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই হিসাব-নিকাশে অনিয়ম করে আসছেন।
বছরের পর বছর বিদ্যালয়ে আয়-ব্যয়ের হিসাব নেই। আয়-ব্যয় নিরীক্ষার জন্য অডিট করানো হচ্ছে না দীর্ঘদিন ধরে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে প্রভাব খাটিয়ে এককভাবেই আর্থিক অনিয়ম করে আসছেন তিনি। ২০১১ সালে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আর্থিক অনিয়মের কারণে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি আয়-ব্যয়ের হিসাব অনুমোদন দেয়নি। প্রতি বছর পরীক্ষার প্রশ্ন কেনা বাবদ অতিরিক্ত ভাউচার দিয়ে বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
২০১৯ সালের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় প্রায় ১ হাজার ৩৫০ শিক্ষার্থীর জন্য প্রশ্ন কেনা বাবদ তিনি খরচ দেখিয়েছেন ৭৭ হাজার টাকা, যার বাজারমূল্য সর্বোচ্চ ৩০ হজার টাকা। ২০১৮ সালে দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষায় ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য ৬ হাজার টাকার প্রশ্ন কেনা বাবদ তিনি খরচ দেখিয়েছেন ৩৯ হাজার ২০০ টাকা।
২০১৮ সালের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় ১ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থীর প্রশ্ন কেনা বাবদ তিনি খরচ দেখিয়েছেন ৯১ হাজার টাকা। যেখানে ৩৫ হাজার টাকার বেশি লাগার কথা নয়। দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্ন কেনার নামে অতিরিক্ত ভাউচার দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
শিক্ষাসফরে দেশের বাইরে থেকেও পরীক্ষার ডিউটির টাকা গ্রহণ করেছেন তিনি। বিদ্যালয়ের স্টেশনারি মালপত্র ক্রয় এবং গাইড বই পাঠ্য করা থেকেও আর্থিক সুবিধা নেন তিনি। আয়-ব্যয়ের জন্য ক্রয় কমিটি থাকলেও তিনি নিজের হাতেই সব কিছু করছেন বলে অভিযোগ আছে।
অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবির হোসেন বলেন, আসলে বিষয়টি এ রকম নয়। এ বিষয়ে সরাসরি সাক্ষাতে কথা বলব। এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল বাশার পারভেজ আর্থিক অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিগত দিনের আয়-ব্যয়ের হিসাব দেখাতে পারেননি প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি তার ভুয়া বিল-ভাউচারের খরচ অনুমোদন দেয়নি।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, প্রধান শিক্ষক কবির হোসেনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না করে আর্থিক অনিয়মের পরিমাণ এখনই বলা যাবে না।