শাহরাস্তি ব্যুারোঃ
শাহরাস্তি উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তার পরিবার কতৃক অত্যাচার, জুলুম ও নির্যাতনের শিকারের হাত থেকে রক্ষা পেতে বলশীদ গ্রামের দেওয়ানজি বাড়ির মৃত হাফেজ ওমর আলীর পরিবারের সদস্য আলহাজ¦ মোঃ শাহজাহান এক সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন ।
১৩ মার্চ শুক্রবার শাহরাস্তি পৌরসভা সদর থ্রী স্টার হোটেলে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্তিতিতে সংবাদ সম্মেলনে আলহাজ¦ মো. শাহজাহান লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করে বলেন, শাহরাস্তি থানাধীন ২৯৬ বলশীদ মৌজার সিএস ৩৮৮নং খতিয়ানে আব্দুল মতিন ১৯৬৩ সালে বিনিময় দলিল মুলে মালিক ও দখলদার হয়। মতিনের মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশ মাতা জোহরা খাতুন হতে হাফেজ ওমর আলী ১০ জুলাই ১৯৭৭ ইং তারিখে ১৪৯১ এবং ১১ মে ১৯৭৭ সালে ১৪৮৯, ১৪৯০, ১৪৯২, ১৪৭৯, ১৪৯৯, ১৫০০, ১৫০১, ১১৭৭, ১৪৭৮ ও ১৪৬৭ সিএস দাগে ক্রয়কৃত ৫.০৫ একর ভূমি এবং ২৪ ডিসেম্বর ১৯৯৪ সালে আব্দুল মতিনের কন্যা মমতাজ বেগম হতে ৫৩৯০ দলিলমুলে ১৪৭৯ দাগে ১.৪০ একর ও ১১৭৮ দাগে ০.২৪ একর সর্ব মোট ১.৬২ একর সম্পত্তি ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে শান্তিপুর্ণভাবে বসবাস করে আসছি। উক্ত দলিল বাতিলের জন্য আব্দুল মতিনের পুত্র আ: হান্নান কর্তৃক দলিলগুলি বাতিলের জন্য গত ৩ অক্টোবর ১৯৭৮ ইং তারিখে একটি সিআর মামলা নং-৭৭৮/৭৮ এডিএম কোর্ট কুমিল্লায় দায়ের করে হেরে যায়। আমার পিতা ওমর আলী কুমিল্লা সাব জর্জ কোর্টে উক্ত জায়গার পক্ষে টাইটেল সুট নং-১২২/১৯৭৯ মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত তাতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞ জারী করেন। হান্নান ওমর আলীকে বিবাদি করে তৃতীয় সাব-অডিনেট জর্জ কোর্ট কুমিল্লায় টিএস নং- ১৩০/৭৯ মামলা দায়ের করেন, বিজ্ঞ আদালত ওই মামলাটি বাতিল করে দেন। কয়েকদিন পর কুমিল্লা সেশন জর্জ কোর্টে সিআর মামল নং- ২০৪/৮১ তারিখ ৩/০৬/৮১ হান্নান বনাম ওমর আলী মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত এই মামলাও বাতিল করে দেন। মোঃ হান্নান বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় মামলার এফআইআর নং-৭/৮১, তারিখ ১৮/৩/৮১ (রেফারেন্স), চাঁদপুর এসডিএম কোর্ট জিআর কেস নং -৭৫/৮১ সরকার ও হান্নান বাদী হয়ে হাফেজ ওমর আলী বিবাদী করে ১৯৮১ সালে জিআর ৭৫/৮১ নং মামলায় হেরে যায়। এরই মধ্য ১৯৮৪ সালে সাবেক ভাইস চেয়াম্যান হাসিনা আক্তারের জেঠা আলী মিয়া ও তার বাবা হাসান ও চাচা হোসেন গংদের বিরুদ্ধে ১৪৭৯ দাগে ৯০ শতক পুকুরে জোরপুর্বক মাছ ধরার অভিযোগে হাফেজ আলী চাঁদপুর বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করে যার নং -(মোশান) ১৮/৮৪। আলী মিয়া গং মোকদ্দমা (মোশান) করে হেরে যান। তৎকালিন সময় আলী মিয়া গংরা বিজ্ঞ আদালতে হাফেজ ওমর আলী গংকে উক্ত সম্পত্তি না দাবি দেন।
দীর্ঘ ৩৯ বছর পর আমাদের দখিলীয় জায়গা ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা আক্তারের ক্ষমতাবলে তার বাবা মো. হাসান ও চাচা মো. হোসেন গোপনে টামটা তহসিল অফিসের মাধ্যামে ১৭৮০/২০১৪-১৫ মোকদমার মাধ্যমে নামজারি জমাখরিজের জন্য দরখাস্ত করলে খরব পেয়ে আমরা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে আপত্তি জানালে সহকারি কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা সরজমিন তদন্তে বাড়ি,পুকুর ও ভিটি নালিশি ভূমিতে আমরা শান্তিপুর্ণ ভাবে ভোগ দখলরত বসবাস করে আসছি মর্মে তাদের নামজারি জমাখারিজের আবেদন নামঞ্জুর করে।
পরবর্তীতে হাসান ও হোসেন এডিসি রাজস্ব চাঁদপুর বিবিধ আপীল ৫৫/২০১৫ নামজারি জমাখারিজ মামলা দায়ের করেন। শাহরাস্তি সহকারী কমিশনার (ভূমি) আদেশ ৩১ মে ২০১৫ ইং তারিখে এডিসি (রাজস্ব) আদেশ বহাল রেখে তাদের আপীল নথিজাত করে দেয়।
এর পর ১১/৫/২০১৫ তারিখে একই জায়গা নিয়া চাঁদপুর এডিএম কোর্টে মামলা দায়ের করেন মামলা দায়ের ৬ দিন পর শাহাজান গংদের পিতা হাফেজ ওমর আলী হতে কবলা সূত্রে ছোট বোন নাজমা বেগম ও তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ১৪৭৯ দাগে হাল ৪২২৮ দাগে ৬.১৬ একর আন্দরে ৪.৪৫ বি.এস ১৬২০ জাহাঙ্গির আলম গং ২৩/৩/২০০০ খ্রি. ০.১৫ একর ভিটি বাড়ী ০.০৯ একর পুকুর একুনে ০.২৮ নাজমা বেগম ও জাহাঙ্গির আলম মালিক হন। ২১৩৭/১০-১১ নং নামজারী জমা খারিজ মামলা মূলে হাল ৪২২৮ দাগে ০.২৪ একর ভূমি ১৬৮৬ নং খারিজ খতিয়ান সৃজিত হয়েছে। নাজমা বেগম ২০০০ সাল থেকে ভিটি, পুকুরের ঘাটলা সহ ভোগ দখলে ছিল, পরবর্তীতে ৩০/০৭/২০১২ খ্রি. তারিখে মকবুল আহম্মেদ মজুমদারের নিকট ২৪৮৪ নং ব্যাপক ক্ষমতা সম্পন্ন দলিল মূলে উক্ত ২৪ শতক জায়গার মালিক হন। নাজমা বেগম আমমুক্তার দেওয়ার সাথে সাথে তার স্থাপনকৃত ঘর উঠাইয়া নিয়াছেন এবং প্রার্থীকে বুঝাইয়া দেন।
এখানে উল্লেখ উপরোক্ত মামলাগুলি হেরে যাওয়ার পর হাসান হোসেন গং গত ১৭/০৫/২০১৭ তারিখে অসৎ উদ্দেশ্যে উক্ত জায়গায় বহিরাগত শতাধিক মস্তানদের দিয়া ৪/৫ হাত ১টি রান্নাঘর, ১টি ছোট ৮/৫ বসতঘর স্থাপন করেন। এখানে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ১১/০৫/২০১৭ তারিখে মোঃ হোসেন বনাম শাহাজাহ গং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্টেট আদালত মামল নং- ৫৪৮/১৫ মামলা দায়ের করেন। এসিল্যান্ড শাহরাস্তি কর্তৃক তদস্তে মামলা মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাদের মামলা নতিজাত করে দেয়।
এর পর থেকে হাসিনা আক্তার ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভূমি দখল সহ নানহ হুমকী ও ভয়ভীতি দেখায়। এতে আমি গত ১৫ মে ২০১৫ তারিখে এডিএম চাঁদপুর আদালতে হাসিনা আক্তার গংদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। যার নং ৫৫১/২০১৫(মিস কেইস ১৫৯/১৬)। তৎকালিন সময়ে আমি হজে¦ থাকায় বিজ্ঞ আদালত মামলাটি নথিজাত করে। পরবর্তী সময়ে ৫৪৮/২০১৫, ৫৫৯/২০১৫ ও ৬৪৬/২০১৫ সালের ৩টি মোকাদ্দমা নিষ্পত্তির লক্ষে শাহরাস্তি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের বিজ্ঞ কৌশলীদের মাধ্যমে লিখিত যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করা হয়। তাতে হাসিনা আক্তার নিষ্পত্তিতে সম্মতি না দিয়ে মামলা ও জুলুম, নির্যাতনের পক্ষ নিয়ে স্থান ত্যাগ করে।
হাসিনাগংরা পুকুরের মাছ রাতে চুরি করতে আসলে ও সম্পত্তি জবর দখলের হুমকী দিলে আমার ছোট ভাই মো. জাকির হোসেন গত ৩০ আগস্ট ২০১৯ ইং চাঁদপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। যার নং ৮৪০/২০১৯। বিজ্ঞ আদালত নালিশি ভূমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। অপর দিকে হান্নানের বোন মমতাজ বেগম, হান্নান ও মৃত ইফসুফ আলীর পুত্র হাসান ও হোসেন গংদের বিরুদ্ধে মো. শাহজাহান গং বিজ্ঞ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল পৃথক ভাবে ৩টি মামলা দায়ের করেন। চাঁদপুর যুগ্ম জেলা দ্বিতীয় আদালতে শাহজাহানের মা হাসমতে নেছা বাদি হয়ে ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর একটি বন্টন নামা মামলা করেন। বর্তমানে ওই ৪টি মামলা চলমান রয়েছে বলে অভিযোগে প্রকাশ। মোঃ শাহাজান সম্মেলনে আরো জানান, এলাকা আইনশৃঙ্খলা যাহাতে অবনতি না হয় এবং বিজ্ঞ আদালতে ল্যান্ড ট্রাইব্যুনাল, বন্টন নামা মামলাগুলি যে রায় দিবেন আমরা মেনে নিবো ।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যর বরাবরে আমি জুলুম, পুকুরের মাছ চুরি, অত্যাচার ও নির্যাতন হুমকি হতে রক্ষা ও ন্যায় বিচার পেতে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা আক্তার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।