বিশেষ প্রতিনিধি :
চাদঁপুরের শাহরাস্তিতে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় এক প্রসুতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি উপজেলার ঠাকুরবাজার পপুলার হাসপাতালে ঘটে। জানা যায়, পৌর এলাকার সেনগাও টুকুর বাপের বাড়ির আবদুল বারেকের পুত্র মোঃ হোসেনের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস (২৫) প্রসব ব্যথা উঠলে ৩১ মে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টায় পপুলার হাসপাতালে নিয়ে আসে। ওই দিন রাত ১২ টায় সিজারে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয় ফেরদৌস। ওই থেকে প্রসুতির ক্ষরণকৃত রক্ত বন্ধ না হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে রাত ১ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্ররণ করেন। ভোর ৪ টায় ঢামেক’এ ভর্তি করা হলে ১ জুন বিকেল সাড়ে ৪ টায় চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যায় ওই প্রসুতি। জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যু খবর এলাকায় পৌঁছলে স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতাল ভাংচুরে উদ্বত হয়।
নিহত ফেরদৌসের স্বামী মোঃ হোসেন (৩৫) বলেন, আমার স্ত্রীর প্রসব ব্যাথা শুরু হলে আমি তাকে পপুলার হাসপাতালে নিয়ে আসি এবং ডাঃ আরিফুল ইসলাম ও ডাঃ নাজমুন নাহার মিতু সিজার করান। এতে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয় তার। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ শুরু হলে ডাঃ আরিফুল ইসলাম ও ডাঃ নাজমুন নাহার মিতু আমাকে ডেকে বলেন, ফেরদৌসের জরায়ু অপারেশন করতে হবে, নতুবা তার রক্ত ক্ষরণ বন্ধ হবে না। আমি অপারগ হয়ে অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করি এবং তারা আমার স্ত্রীর জরায়ু অপারেশন করেন। অপারেশন শেষে তারা আমাকে সদুত্তর দিতে পারে নি। এব্যাপারে তিনি আইনের সহযোগিতা কামনা করেন বলে জানান।
ডাঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, রোগি আসার পর প্রয়োজনীয় সকল পরিক্ষায় রোগির ” প্লাসেন্টা প্রিভিয়া” রোগ ধরা পড়ে। তখন তার অভিভাবকদের জানালে তারা অঙ্গিকার নামা ফরম পূরণ করে সিজার করার অনুমতি প্রদান করেন। সফল অপারেশনের পর শুরু হয় রক্ত ক্ষরণ। রোগির অভিভাবকদের জানালে তারা রক্তের ব্যবস্থা করেন। এক পর্যায়ে রোগির অবস্থা খারাপ হলে তাদের সাথে পরামর্শ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি।
তিনি আরও বলেন, রোগির প্রসব ব্যথা শুরু হলে তারা হোম ট্রায়াল করেছেন, যে কারনে রোগির প্লাসেন্টা প্রিভিয়া রোগটি বেড়ে যায় এবং অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ শুরু হয়। রোগি তার প্রথম সন্তান প্রসবকালে বড় ধরনের সিজার করেছিলেন।
থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ আলম বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং উত্তেজিত জনতাকে বুঝিয়ে ঘটনা নিয়ন্ত্রন করি। নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।
বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বলেন, এ হাসপাতালে এমন ঘটনা আরও ঘটেছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না হওয়ার জন্য আইনের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন