গাজী মমিন :
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে যখন সবকিছুই থমথমে অবস্থা, ঠিক সেই সময়থেকে সরকারের নিদের্শনা মেনে গ্রাহকদের কাছথেকে ঋণের টাকা গ্রহণ না করা, অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে ঋণ, কৃষি ঋণ সঞ্চয়ের টাকা প্রদান করছে ফরিদগঞ্জ উপজেলা ব্র্যাক’র কার্যালয়।
এছাড়াও করোনা সংক্রামণের প্রথম থেকেই মাস্ক, লিফলেট বিতরণ, সামাজিক দূরত্ব মেনেচলার স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে বৃত্ত অংকন, মাইকে প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন, মসজিদে, মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থানে হাতধোয়ার ব্যবস্থাকরার পাশাপাশি জীবানুনাশক স্প্রেকরাসহ কোভিড-১৯ সম্পর্কে সুবিধাভোগীদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও খোঁজ-খবর রাখছে ব্র্যাক কর্মীরা।
দুঃসময়ে অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে ব্র্যাকের এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগকে প্রশংসা জানিয়েছেন ঋণসহ সঞ্চয়ের টাকা পাওয়ায় সুবিধাভোগীরা।
সরেজমিনে ব্র্যাকের ফরিদগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সঙ্কটকালিন সময়ে ব্র্যাকের মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচির সদস্য-সদস্যাদের চাহিদা মাফিক ঋণ প্রদান, গ্রামীণ কৃষিকে সচল রাখতে এবং উৎপাদন কৃদ্ধির লক্ষে কৃষি ঋণ প্রদান, খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সদস্য-সদস্যাদের সঞ্চয়ের টাকা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে।
ব্র্যাকের গ্রাহক আছমা বেগম বলেন, আমরা ব্র্যাকে সঞ্চয় জমা রেখেছিলাম। করোনাভাইরাসের কারণে ব্র্যাক থেকে সবসময় খোঁজখবর রাখা হয়। ঘরে খাবার আছে কি-না। আর্থিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে কিনা। সবধরণের ব্র্যাক অফিসের ভাইরা। ঋণের কোনপ্রকার চাপ নাই।
ব্র্যাক অফিস থেকে বলেছেন যারা পারবেন বিকাশের মাধ্যমে টাকা দিবেন না পারলে কোনচাপ নাই। সঞ্চয়ের টাকা নিতে এসেও কোনপ্রকার হয়রানীর শিকার হই নাই। বরঞ্চ তাদের আন্তরিকতায় আমরা মুগ্ধ। ব্র্যাকের এধরণের কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসনীয়। তারা বিকাশের মাধ্যমে আমাদের সঞ্চয়ের টাকা পরিশোধ করছেন। এই দুর্দিনে আমাদের সহায়তা না করলে দিন পার করা মুশকিল হয়ে যেতো।
ব্র্যাকের ফরিদগঞ্জের এলাকা ব্যবস্থাপক আব্দুল মতিন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সরকারের বিধিনিষেধ অনুযায়ী কাউকে ঋণ পরিশোধ করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে না। বরঞ্চ অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে আমরা ঋণ প্রদান করছি। করোনাভাইরাসের কারণে এছাড়াও ডিপোজিট ও সঞ্চয়ের টাকা কেউ নিতে চাইলে বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে। তবে যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো আছে তারা বিকাশের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করছেন।
তিনি আরো বলেন, ঋণ উত্তোলন না করে এখন মানুষের পাশে দাঁড়াতে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে।
একপ্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্র্যাক সবসময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে আসছে। দেশের এই দূর্যোগ মুহুর্তে ব্র্যাকের কর্মকান্ডে সংক্রিয় অংশগ্রহন করতে পেরে নিজেকে একজন গর্বিত মানুষ হিসেবে আত্বপ্রকাশ করতে পেরেছি।
ব্র্যাকের জেলা আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক এ.এস.এম কামরুল হাসান বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রামণের প্রথম থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমের উদ্যোগ নেয় ব্র্যাক। ব্র্যাকের উদ্যোগে লিফলেট বিতরণ, সাবান বিতরণ, আর্থিক সহায়তা প্রদান, ঋণ প্রদানসহ বিভিন্ন প্রকারের সহায়তা মুঠোফোনের মাধ্যমে গ্রাহকদের দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ব্র্যাকের কর্মকান্ডে সংক্রিয় অংশগ্রহন করতে পেরে নিজেকে একজন গর্বিত মানুষ হিসেবে আত্বপ্রকাশ করতে পেরেছি।