গাজী মমিন, চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ:
ফরিদগঞ্জ থানার ওসির নামে গুজবের সঙ্গে জড়িত ২ জন আটক হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে তাদের আটক করা হয়। তারা হলেন মোঃ মামুন হোসেন রুবেল (২০) ও শাহাপরান আলম খান রাব্বি (২৫)। ত্রাণ দেয়ার নামে ওসি এক নারীর সঙ্গে অনৈতিক কাজ করেছেন। ফেসবুকে এমন একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন তারা। স্ট্যাটাসে ওসি, ওই নারী ও তার বাবার নাম উল্লেখ করা হয়। আপলোড করা হয় ওসি ও কথিত নির্যাতিত নারীর ছবি। গুজবটি এরাকায় ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আটককৃতরা এখন পুলিশ হেফাজতে আছেন।
সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৪ নং ফরিদগঞ্জ (দক্ষিণ) ইউনিয়নের পূর্ব পোঁয়া গ্রামের চৌকিদার বাড়ীর মোঃ বাবুল মিয়ার পুত্র মোঃ মামুন হোসেন রুবেল (২০)। তিনি বুধবার (২৯-এ এপ্রিল) ভোর ৪টা ৭ মিনিটে তার মোবাইল ফোনের ফেসবুক-এর ঔধৎরহব অভৎরহব জঁসধ নামের আইডি থেকে ব্রেকিং নিউজ শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস ছাড়ে। যাতে উল্লেখ করা হয়, “ত্রাণ দেওয়ার নাম করে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রকিব ০৮নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের ০৩নং ওয়ার্ডের রফিকুল ইসলাম (৫৬) চায়ের দোকানদার এর মেয়ে সালমা (১৯) নামে এক তরুনীকে ধর্ষন করে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং তার পদত্যাগ চাই”।
রুবেল পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দেয় যে, প্রকৃতপক্ষে উক্ত পোস্টের বিষয়ে কোনো ঘটনা ঘটে নাই। স্থানীয় শাহাপরান আলম খান রাব্বি (২৫), পিতা: মাহাবুব আলম খান, সাং- গজারিয়া (খান বাড়ী), থানা: ফরিদগঞ্জ, জেলা: চাঁদপুর এর প্ররোচনায় আমি প্ররোচিত হয়ে বর্ণিত মিথ্যা তথ্যটি আমার টাইমলাইনে পোস্ট করি। প্রকৃতপক্ষে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব আব্দুর রকিব স্যার এমন কোন ঘটনার সাথে আদৌ জড়িত নয়। ফরিদগঞ্জ থানাধীন ০৮নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের ০৩নং ওয়ার্ডের রফিকুল ইসলাম এবং তার মেয়ে সালমা নামক কাউকে আমি চিনি না এবং এই নামে কেউ আছে কিনা তা আমার জানা নাই। মূলত আমি ইন্টারনেট থেকে একটি অচেনা মেয়ের ছবি ডাউনলোড করে ওসি ফরিদগঞ্জ থানা সাহেবের ছবিসহ আমি পোস্টটি তৈরি করি। বর্তমানে দেশে করোনা ভাইরাস মহামারির সময় ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ তথা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী যে মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে তা প্রশ্নবিদ্ধ করতে ও তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং গুজব রটানোর উদ্দেশ্যে আমি– শাহাপরান আলম খান রাব্বি-এর উদ্দেশ্যেমূলক প্ররোচনায় ঔধৎরহব অভৎরহব জঁসধ নামক ফেইসবুক আইডি হতে বর্নিত পোস্ট করি। আমি আমার এই ভুলের জন্য লজ্জিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।
ফেসবুকে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, এলাকায় ও আশেপাশে ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
তাহলে, এই অভিযোগের ভিত্তি কি। এমন প্রশ্নে নানান মন্তব্য পাওয়া গেছে। কেউ বলেছেন,করোনা মহামারিতে জীবন বাজি রেখে কাজ করা ফরিদগঞ্জ পুলিশ বাহিনীকে মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্য এমন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা ও চক্রান্ত করা হয়েছে। ফলে, চক্রান্তকারীরা বর্তমানে সহজ পথ- ‘ফেসবুক’কে বেছে নিয়েছে।
এ ব্যপারে কথা হয় থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রকিব এর সঙ্গে। এই অপরাধী আটকের সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম না। বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ দেখেছেন। তাদের নামে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এর সঙ্গে অন্য কেউ জড়ি থাকলে সকলেই আইনের আওতায় আসবে।
এদিকে ওসির বিরুদ্ধে এমন কুরুচিপূর্ন মন্তব্য নিয়ে ফেসবুকে ফেক আইডি দিয়ে প্রচার করার বিষয়ে ষড়যন্ত্র কারীদের বিচারের দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফুঁসে উঠেছে সচেতন মহল।
সূত্রে জানা গেছে, আটককৃতরা রাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জড়িত।