• মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৩৭ অপরাহ্ন

ফরিদগঞ্জের সীমিত আয়ের মানুষদের করোনা নিয়ে চিন্তিত নয় ॥ চিন্তা শুধু এনজিও‘র কিস্তি পরিশোধের

আপডেটঃ : সোমবার, ২৩ মার্চ, ২০২০

গাজী মমিন, ফরিদগঞ্জ:
করনোভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে জনসমাগম যাতে না ঘটে সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনার পর চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে গণমানুষের চলাচল আগের থেকে অনেক কমে গেছে। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যাংক, বেসরকারি এনজিও ও সমিতি থেকে ঋণ নেয়া টাকার কিস্তি পরিশোধ নিয়ে বিপাকে পড়েছে ঋণগ্রহীতারা। দেশের বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে প্রতি সপ্তাহ কিংবা প্রতিমাসে কিস্তির টাকা পরিশোধ কিভাবে করবে এ নিয়ে চিন্তিত রয়েছে অল্প আয়ের মানুষেরা। কয়টি বেসরকারি এনজিও থেকে ঋণ নেয়ার টাকার কিস্তি পরিশোধ নিয়ে একাধিক ঋণ গ্রহীতার মধ্যে কেউ ক্ষুদ্র চায়ের দোকানদার, আবার কেউবা সিএনজি অটোরিক্সা চালক কিংবা দিনমজুর। তারা বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে এখন আর আগের মতো মানুষের চলাচল না থাকায় ইনকাম আগের মতো নেই। যানবাহনে কাংক্ষিত যাত্রী পারাপার করা যাচ্ছে না। কিন্তু টাকা রোজগার হউক আর না হউক এমন এক দুঃসময়ে ঋণের কিস্তির টাকা যোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। কিস্তির টাকার জন্য এনজিও এর লোকরা যথাসময়ে টাকা না দিলেও বাড়ি ছাড়ছে না। এমন এক নাজুক পরিস্থিতি নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে অনেককেই। ফরিদগঞ্জ বাজারে রতন বাবু নামে এক ব্যক্তি যার কাজ হলো জুতা সেলাই করে সংসার চালানো। তিনি বলেন একটি এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন। এই টাকার কিস্তি প্রতি সপ্তাহে ৮শ টাকা যোগাড় করতেই হয়। কিন্তু করোনার কারনে রাস্তায় মানুষের চলাচল কম থাকায় আগের মত রোজগার করতে পারছেন না তিনি। একই ভাবে দিনমজুর মাসুদ বলেন, এখন কেউ কাজের জন্য আগেম মতো ডাকে না। কাজ না থাকলেও প্রতি সপ্তাহে আমার ঋণের কিস্তির টাকা কিভাবে পরিশোধ করবো তা নিয়ে এখন দুচিন্তায় আছ্।ি তবে দেশের বর্তমান দুঃসময়ে কিস্তির টাকা আদায় স্থগিত রাখার দাবী তুলেছে ভুক্তভোগীরা। অপরদিকে ফরিদগঞ্জে প্রথম শ্রেণীর এনজিও চান্দ্রা শিক্ষিত বেকার যুব সমিতির সভাপতি, সমাজ সেবায় বিশেষ অবদান রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে জাতীয় পুরুষ্কার প্রাপ্ত মো. জসিম উদ্দীন এ প্রতিনিধিকে বলেন, শুধুমাত্র করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারনে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরাই কিস্তির টাকা আদায়ের ক্ষেত্রে তাদেরকে সময় দেয়ার দাবিটি যৌক্তিক। তবে এ ক্ষেত্রে কোন সুযোগসন্ধানী কেউ যাতে আমাদের আমানতকারীর টাকা আত্বসাৎ করার সুযোগ না পায়, সেই বিষয়টি আমাদের আমানতকারীদের স্বাথের্ই ঋণগ্রহীতাদের মাথায় রাখতে হবে। ফরিদগঞ্জের গ্রামীন ব্যাংকের ম্যানেজার আল-আমিম মাসুদ বলেন, দেশের বর্তমান দুঃসময়ে অল্প আয়ের মানুষের ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত রাখার বিষয়ে আমরা উপরিমহলের কোন নির্দেশনা পাইনি। তবে উক্ত দাবীটি যৌক্তিত বলে তিনিও একমত পোষন করেছেন। এ নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকের জৈনিক কর্মকর্তা বলেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে কেবলমাত্র ক্ষতিগ্রস্তদের স্বাথের্ই তাদের সাময়িক ভাবে কিস্তির টাকা আদায় স্থগিত রাখার স্বার্থে অল্প আয়ের মানুষের ঋণগ্রহীতাদের যৌক্তিত ওই দাবীর পক্ষে সরকার এখনো কোন নির্দেশনা দেয়নি। ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিউলী হরি এ প্রতিনিধকে বলেন, করোনাভাইস পরিস্থিতির কারনে দেশে এখন মূলত দুঃসময় বিরাজ করছে। অল্প আয়ের মানুষের ঋণ নেয়া কিস্তির টাকা আদায় দেশের এই দুঃসময়ে স্থগিত রাখার এই যৌক্তিক দাবীর পক্ষে আমিও একমত। তারপরও কেউ যেন অল্প আয়ের মানুষের কাছ থেকে দেশে চলমান এই দুঃসময়ে কিস্তির টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে কোন বেশী বাড়াবাড়ি না করে সে বিষয়ে আমি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

ফেসবুকে মানব খবর…