শিমুল হাছান:
চাঁদপুর জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের মধ্যে সাইফুল ইসলাম রিপনের নজর এখন ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে বিজয়ী হওয়া। সে লক্ষ্যে তিনি প্রচার-প্রচারনা শুরু করে দিয়েছেন।
প্রতিদিনই তিনি কোন না কোন সামাজিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন এবং গণসংযোগ করে সকলের দোয়া ও সমর্থন কামনা করছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম এ্যাড. সিরাজুল ইসলামের ভাতিজা মো. সাইফুল ইসলাম রিপন জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। তিনি ফরিদগঞ্জ পৌরসভার চরকুমিরা গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির মৃত- ডা. নুরুল ইসলামের সূযোগ্য সন্তান।
জানা যায়, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ফরিদগঞ্জসহ জেলার ৬ টি পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন তিনি। জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হয়েও কেন ফরিদগঞ্জ পৌরসভার প্রার্থী হবেন সাইফুল ইসলাম রিপন।
মেয়র পদে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জেলা পরিষদে বরাদ্ধকম থাকায় জনগণকে আশানুরুপ সেবা দিতে পারছি না। জনপ্রতিনিধি হিসেবে এখন মাত্র সীমাবদ্ধ সংখ্যক জনগণের সেবা করার সুযোগ পাচ্ছি। যদি মেয়র হতে পারি তাহলে বৃহত সংখ্যক মানুষের সেবা করার সুযোগ পাবো।’
সামাজিক নানা উন্নয়ন কাজ সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘আমি জেলা পরিষদের সদস্য হওয়ার পর প্রাপ্ত বরাদ্ধ অত্যন্ত স্বচ্ছতার সহিত বন্টন করেছি। এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত মসজিদে আর্থিক অনুদান দিয়েছি। এছাড়া ঈদগাহ, মাদ্রাসা, শসান, মন্দির উন্নয়ন, গভীর নলকূপ স্থাপন, রাস্তা-কালভার্ট সংস্কার, শিক্ষানুদান, অসহায়দের রিক্সা প্রদান, দুস্থঃনারীদের সেলাই মেশিন প্রদান ও অসহায়দের চিকিৎসা অনুদান এবং অসহায় গৃহহীন পরিবারের জন্য ঘর নির্মান করে দিয়েছি।
দলীয় মনোনয়ন সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘আমি একজন আওয়ামী পরিবারের সন্তান। আমার চাচা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম এ্যাড. সিরাজুল ইসলাম। আমার চাচাতো ভাই জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সফল সভাপতি ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সুযোগ্য চেয়ারম্যান এ্যাড. জাহিদুল ইসলাম রোমান।
তিনি বলেন, জাহিদুল ইসলাম রোমান ভাইয়ের নির্দেশে তৃণমূল থেকে আওয়ামী লীগকে সু-সংগঠিত করেছি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিজয়ের জন্যে রাজনীতির মাঠে নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছি। এছাড়া গত ২০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইবো। আমার বিশ্বাস আমার অতীত দলীয় কর্মকান্ড দেখে মেয়র পদে দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।’
জনসাধারণের কাছে দোয়া ও সমর্থন চেয়ে তিনি আরো বলেন, ‘দেশ ও জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে যিনি কাজ করেন তিনি হলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলা নির্মানে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। আমি ফরিদগঞ্জ পৌরবাসীর সমর্থন নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করতে চাই। বঙ্গবন্ধুর একজন সৈনিক হিসেবে কাজ করে যেতে চাই। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার ভূমিকা কি? সে বিষয়ে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার জনগনের ভালো ধারণা রয়েছে। সকলের দোয়া ও সমর্থন নিয়ে ফরিদগঞ্জ পৌরসভাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ’
প্রসঙ্গত চাঁদপুর সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় সাইফুল ইসলাম রিপন ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন এরপর ফরিদগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য হন। জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি ৬৬ ভোটের মধ্যে ৪২ ভোট পেয়ে সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়াও তিনি ফরিদগঞ্জ পৌর আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি।
এছাড়াও তিনি ফরিদগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি, চরকুমিরা খাতুনে জান্নাত মহিলা মাদ্রার সদস্য, চরকুমিরা চিশতীয়া জামে মসজিদ ও ঈদগাঁ কমপ্লেক্সের সহ-সভাপতি ও মাদকবিরোধী সংগঠন সেইফ ফরিদগঞ্জ এর প্রতিষ্ঠাতাসহ বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
উল্লেখ্যঃ সাইফুল ইসলাম রিপনর ২০০১ বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের সময় মিথ্যা মামলায় ৬ মাস ফেরারী জীবন যাপন করেন। অতঃপর বিভিন্ন সময় গনতান্ত্রিক আন্দোলনে দলের হয়ে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে জেল- জুলুম- মামলা- হামলার স্বীকার হয়েছেন।