বিশেষ প্রতিনিধি :
চাঁদপুরের মেঘনা নদীর উজান থেকে বয়ে আসা ঢলে পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। শুক্রবার সকালের জোয়ারে মেঘনার পানি বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ৪.১৭ সে. মি.। যা বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু রায়হান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, উজানের পানি এখন মধ্যাঞ্চলের দিকে গড়াচ্ছে। এ কারণে গত দুই-তিন দিন থেকে মেঘনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করছে। জোয়ারে বাড়লেও সেই পানি ভাটায় নেমে যাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার এবং আগের দিন বৃহস্পতিবার এ দুই দিন সকাল-সন্ধ্যার জোয়ারে নদীর পানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় শহরসহ জেলার নিম্নাঞ্চল ডুবে যায়। কিন্তু ভাটার সময় সেই পানি আবার নেমেও গেছে।
চাঁদপুরের মেঘনায় পানি বিপদসীমার খুবই কাছাকাছি অবস্থায় প্রবাহিত হচ্ছে বলে ১৮ জুলাই জেলা প্রশাসনের সাথে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ বিষয়ক প্রস্তুতি সভায় জানানো হয়।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন এলাকাসহ চাঁদপুর জেলা প্রশাাসনের সাথে ভিডিও কনফারেন্স করেন পানি সম্পদ মন্ত্রাণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার।
ভিডিও কনফারেন্সে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ জামাল হোসেন সচিবকে জানান, চাঁদপুরে মেঘনার পানি বিপদসীমার মাত্র ১৫ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। এর দুইদিন পরই বিপদসীমা অতিক্রম করে মেঘনার পানি।
এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে হাইমচরে নদীর পাড় ভাঙ্গছে। নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেড এবং পুরাণবাজার দুধপট্টি এলাকা দিয়ে মেঘনার প্রবল স্রোত বইছে। নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় চাঁদপুর-শরিয়তপুর ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান হরিণাঘাট ম্যানেজার পারভেজ খান।
স্রোতের তীব্রতায় সমুদ্র বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে আসা জাহাজগুলো চাঁদপুর তিন নদীর মিলনস্থল অতিক্রমকালে চালক চরম হিমশিম খাচ্ছে। ঘূর্ণিস্রোতের কবলে পড়ে অনেক জাহাজ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে পাথর বোঝাই একটি কোস্টার জাহাজ ডুবেও যায়।
পুরাণবাজার মোলহেড এলাকায় শহর রক্ষাবাঁধের পাশে আশ্রয় নেয়া আফিল উদ্দিন জানান, আছর নামাজের পর থেকে এখানে তীব্র স্রোতের ভয়ঙ্কর রূপ তারা দেখতে পাচ্ছেন। নদীর পানি ফুলে ফেঁপে বাঁধের ওপর দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে। এ ভয়ানক পরিস্থিতিতে চাঁদপুর শহর রক্ষাবাঁধ হুমকির সম্মুখীন।