• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫১ অপরাহ্ন

হাজীগঞ্জে বালু ফেলে চলাচলের পথ দখল, অবরুদ্ধ দুই পরিবার

আপডেটঃ : সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১

হাজীগঞ্জ ব্যুরো
হাজীগঞ্জে সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে গত দুই দিন ধরে রাস্তায় (চলাচলের পথ) জোরপূর্বক বালু ফেলে দুই পরিবারকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টির প্রতিবাদ করলে অতর্কিত হামলায় সবুজ মজুমদার (২৫) নামের এক যুবক আহত হয়। গত ২৪ জুলাই শনিবার বিকালে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন কংগাইশ গ্রামের উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে মজুমদার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় আহত সবুজ মজুমদারের পিতা দুলাল মজুমদার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ (নং- ১২২৫) করেছেন। অভিযোগে একই বাড়ির মীর হোসেন মজুমদারের ছেলে সাইমুন ইসলাম প্রিন্স (৩২), মৃত আব্দুর রহমান মজুমদারের ছেলে আ. হান্নান মজুমদার (৫০), মো. জাবেদ মজুমদার (৩২) ও মো. মাসুদ মজুমদার (৩৪), আ. হান্নান মজুমদারের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৩৭) কে বিবাদী করা হয়।
বাদী দুলাল মজুমদার জানান, পৌরসভাধীন কংগাইশ মৌজার ১১৩০নং দাগে .৫০ (আধা শতাংশ) ভূমি ক্রয় করে, তা বালু দ্বারা ভরাটের পর গত বছর পাকা রাস্তা (চলাচলের পথ) নির্মাণ করা হয়। যা চলাচলের পথ হিসেবে সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে গত শনিবার (২৪ জুলাই) বিকালে উল্লেখিত বিবাদীরা ওই পথে (রাস্তা) জোরপূর্বক দুই ট্রাক বালু ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং আমাদের দুই পরিবারকে অবরুদ্ধ করে ফেলে।
এই ঘটনায় আমার ছেলে সবুজ মজুমদার প্রতিবাদ করলে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায় বিবাদীরা। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাই এবং এ দিন রাতেই হাজীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি ও মারধরসহ আমাদেরকে খুন করে লাশ গুম করার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। বর্তমানে আমরা অবরুদ্ধ আছি এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
একই অভিযোগ করে অপর ভুক্তভোগি রৌশনারা খানম বলেন, আমার ভাই মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল চলাচলের পথ হিসেবে অভিযোগের বাদী দুলাল মজুমদারের স্ত্রী মর্জিনা বেগমের কাছ থেকে .৫০ (আধা শতাংশ) ভূমি ক্রয় করেন। আবার এই ভূমি মর্জিনা বেগম উল্লেখিত বিবাদীদের পরিবারের কাছ থেকে ক্রয় করেন। অথচ বিবাদীরা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি এবং প্রায় সময় হামলাসহ হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, সবশেষ গত বছরের (২০২০ইং) ২৪ অক্টোবর শালিসি বৈঠকে দুই-পক্ষের আপোষ-মিমাংসার মাধ্যমে সবকিছু মেনে নিয়ে কাগজে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু সালিশি বৈঠকের তিন দিন পর (২৮ অক্টোবর) তারা (বিবাদী) ওই চুক্তি মানে না বলে কাগজের প্রথম কপিতে বাতিল লিখে আমাদেরকে ফেরত দেয়। এরপর গতকাল শনিবার (২৪ জুলাই) তারা উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে জোরপূর্বক দুই ট্রাক বালু ফেলে আমাদের চলাচলের পথ অবরুদ্ধ করে দেয়।
এ দিকে বালু ফেলার বিষয়টি স্বীকার করে বিবাদী সাইমুন ইসলাম প্রিন্স বলেন, আমরা আমাদের সম্পত্তির উপর বালু রেখেছি। তারা (বাদীপক্ষ) যে সম্পত্তি দাবী করছে, তা রাস্তার আরো পূর্ব দিকে, অর্থ্যাৎ বতর্মানে রাস্তার এক তৃতীয়াংশ আমাদের সম্পত্তির উপর রয়েছে। এই বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান। তাই বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবেলা করা হবে এবং রায় যার পক্ষেই যাবে, তিনি তা মেনে নিবেন বলে জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে সাইমুন ইসলাম প্রিন্স বলেন, মারধরের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি বালু ফেলার পরে দুলাল মজুমদার ও তার ছেলেরা এসে আমার দেয়ালটি ভেঙ্গে ফেলে। এরপর মঞ্জুর হোসেন ও তার ছেলেরা ঘটনাস্থলে আসলে তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি করে। তারপর শুনেছি ছাদ থেকে কে বা কারা ইট নিক্ষেপ করলে, তখন দুই পক্ষই একে অপরকে ইট ছুঁড়ে মারে।
অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ জানান, অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা ও থানার উপ-পরিদর্শক মো. জয়নাল আবেদীন-২ রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরবর্তীতে তদন্তপূর্বক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

ফেসবুকে মানব খবর…