নিজস্ব প্রতিনিধি
হাজীগঞ্জের রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনিসুর রহমান মজুমদারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, কুমিল্লা এর চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. আবু বকর ছিদ্দিক, অভিভাবক শ্যামল শীল ও মো. জাকির হোসেন। গত ৭ জুলাই (মঙ্গলবার) এই অভিযোগ করা হয়।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, আনিসুর রহমান মজুমদার ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হওয়ার পর কমিটির সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে নিজের ইচ্ছেমত অর্থ আত্মসাৎ, স্বেচ্ছাচারিতা ও বিভিন্ন খাতে অনিয়ম করে আসছে। অভিযোগে ৬টি সু-নির্দিষ্ট দিক উল্লেখ করে তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানের সু-দৃষ্টি কামনা করেন অভিযোগকারীরা।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কোন প্রকার সরকারি অনুমতি ও টেন্ডার ছাড়াই বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত ৫০টির অধিক গাছ বিক্রি করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৫ লাখ টাকার উর্ধ্বে। বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত ২০০ গজ বিশিষ্ট (১২ কক্ষ) একটি টিনের ঘর এবং উত্তর পাশে অবস্থিত ১০০ গজ বিশিষ্ট একটি টিনের ঘর বিক্রি করা হয়।
বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে সহায়ক বই পাঠ্য করে। যার হিসাব পাওয়া যায়নি। চলতি বছরের (২০২০ খ্রিস্টাব্দ) ৩১৫ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে জনপ্রতি ৩ হাজার টাকা করে আদায় করে মেঘনা ব্যাংক, রামপুর বাজার শাখায় তার (আনিসুর রহমান মজুমদার) ব্যক্তিগত একাউন্টে জমা দিয়ে, তা পরবর্তীতে উত্তোলন করে নিয়ে যায়।
বিদ্যালয়ের অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ২০১৮-২০১৯ সনের বোর্ড রেজিষ্ট্রেশন নামে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫০০ টাকা এবং নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৭০০ টাকা আদায় করে নিজেই ভক্ষণ করে। পরবর্তীতে নিজের অনুদান হিসাবে দেখায়। এ ছাড়াও বিভিন্ন আর্থিক লেনদেনে নিজে ভাউচার তৈরি করে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনিসুর রহমান মজুমদারের মুঠোফোনে (০১৮১৯—৭৩৯) বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি এবং পরে ফোন ব্য্যকও করেননি। যার ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সচিব কবির হোসেন উল্লেখিত অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, যা কিছু করা হয়েছে তা বিধি মোতাবেক ও রেজুলেশনের মাধ্যমে করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে যোগাযোগ করে হলে কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়ীয় জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগ ফি (ব্যাংক ড্রাপট) পরিশোধের মাধ্যমে অভিযোগ দিয়ে থাকলে, তা চেয়ারম্যান স্যারের নির্দেশনার আলোকে তদন্তপূর্বক বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।