কচুয়া: নিজ ঘরের সামনে জাতীয় পতাকা হাতে এক পা হারা শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হাসান রনি।
জিসান আহমেদ নান্নু ॥
সাজ্জাদ হাসান রনি। ছোট বেলা থেকেই খেলাধুলায় বেশ পারদর্শী। পঞ্চম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় কুমিল্লার চান্দিনায় একটি ফুটবল টিমে খেলতে গিয়ে পায়ে মারাত্মক হোঁচট খান। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে চিকিৎসা নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তার। ডাক্তারের পরামর্শে একটি পা কেটে ফেলা হয়। এরপরও থেমে নেই তিনি। অদম্য ইচ্ছা শক্তি ও নানান প্রতিবন্ধকতা পিছনে ফেলে প্রতিদিন দু’হাতের বাহুর নিচে স্কেপে ভর করে হেটে নিজ বাড়ি থেকে প্রায় ১ কি.মি দূরে স্কুলে যায়। মেধাবী ছাত্র সাজ্জাদ হাসান রনি চাঁদপুরের কচুয়ার তেতৈয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী জীবনকে হার মানিয়ে জীবনযুদ্ধে টিকিয়ে রেখেছে নিজেকে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও বাদ যায়নি খেলাধুলা থেকে। এক সময় বিভিন্ন টিমের হয়ে খেলাধুলা করলেও এখন প্রতিদিন বাড়ির আঙ্গিনায় বন্ধুদের সাথে ক্রিকেট ও ফুটবল নিয়ে খেলাধুলা করে থাকে এক পায়ে ভর করে।
এক পা হারা সাজ্জাদ হাসান রনির বাবা আবু জাফর বলেন, ছোটবেলা থেকেই সাজ্জাদ লেখাপড়ায় ও খেলাধুলায় আগ্রহী ছিল। তবে সে যখন পঞ্চম শ্রেনীতে পড়েন তখন চান্দিনায় ফুটবল খেলায় তার একটি দূর্ঘটনা হয়। সেই থেকে দীর্ঘদিন সে পা নিয়ে নানা জটিলতার রোগে ভুগেন। এক সময়ে তার এক পা কেটে ফেলা হয়। সেই থেকে সাজ্জাদ হাসান রনি নানান কষ্টের মধ্য দিয়ে চলাফেরা করছেন।
তেতৈয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: আবুল কালাম জানান, সাজ্জাদ হাসান রনি খুবই মেধাবী ছাত্র। অন্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় আমরা তাকে ভিন্নভাবে সর্তকতার সহিত পাঠদান করে থাকি।
সাজ্জাদ হাসান রনি বলেন, বৃষ্টি হলে স্কুলে যেতে আমার খুব কষ্ট হয়। এক পা দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে যাওয়ায় শরীরও দুর্বল হয়ে পড়ছি। তবে আমার ইচ্ছা আমি একজন জাতীয় প্রতিবন্ধী ক্রিকেট টিমের খেলোয়ার হতে আগ্রহী। তার স্বপ্ন পূরনে সরকারের পাশাপশি বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন তার পরিবার। লেখাপড়ায় কেউ তাকে সহযোগিতা করতে চাইলে তার মায়ের ০১৭৩২২৯৬৪০৯ এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করছেন।