• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১২ অপরাহ্ন

ফরিদগঞ্জের রাতের আঁধারে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ

আপডেটঃ : শুক্রবার, ২০ আগস্ট, ২০২১

গাজী মমিন, ফরিদগঞ্জ:
ফরিদগঞ্জ উপজেলায় রাতের আঁধারে এক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘর দখল করার অভিযোগ উঠেছে। ৯৯৯-এ সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের মদনেরগাঁও গ্রামে বুধবার দিনগত গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের মদনেরগাঁও গ্রামের চৌধুরী বাড়ির চিকিৎসক প্রনব রায় চৌধুরীর পরিবারের ব্যবহার না করা আধাপাকা ঘর ছিল। বুধবার গভীর রাত ১টা থেকে শুরু করে ৫ঘন্টার মধ্যে কুয়েত প্রবাসী মিরণ খান তার লোকজন দিয়ে আধাপাকা ওই ঘরের নতুন টিনের চাল এবং ঘরের দরজা জানালা লাগিয়ে ঘর দখল করে।

এব্যাপারে ওই সম্পত্তির মালিক চাঁদপুর জেলা শহরে বসবাস করা হোমিও চিকিৎসক প্রনব রায় চৌধুরী জানান, তারা তিন ভাইয়ের কেউই বাড়িতে থাকেন না। এই সুযোগে পাশ^বর্তী মিরন খান তাদের বাড়ির অন্য শরীকদের কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছে এমন দাবী করে বারংবার জমি দখলের চেষ্টা করে। সর্বশেষ বুধবার গভীর রাতে লোকজন দিয়ে আমাদের মালিকানাধীন অব্যবহৃত আধাপাকা ঘরটিতে টিনের চালা ও ঘরের দরজা জানালা লাগিয়ে দখল করে নেয়।

তিনি আরো জানান, তারা পৈত্রিক ও খরিদ সূত্রে এখন পর্যন্ত ৪ একর ৬১ শতক জমির মালিক। একই বাড়ির অন্য অংশীদার চিরকুমার সন্তোষ রায় চৌধুরী জিবদ্দশায় তার সম্পত্তি তার মা লুডু রানী নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়। পরে ওই সম্পত্তি থেকে লুডু রানী কিছু অংশ হযরত মাওলানা সাইফুল্যাহ নকশেবন্দি মুজাদ্দেদি ও একই বাড়ির নীলকান্ত রায় চৌধুরী কাছে বিক্রি করেন। কিন্তু সন্তোষ রায় চৌধুরীর মৃত্যুর পর পাশ^বর্তী কুয়েত প্রবাসী মিরণ খান দাবী করে, তিনি সন্তোষ রায় চৌধুরীর কাছে কিছু জমি ক্রয় করেছে। সেই থেকে সে আমাদের পৈত্রিক জমি দখল করার পাঁয়তারা করে আসছে। আমরা তাদেরকে বারংবার বলেছি, জমির দলিল নিয়ে স্থানীয় ভাবে বসার জন্য। কিন্তু সে তা না করে বারবার আমাদের জমি দখল করার চেষ্টা করছে। আমরা তার অর্থ জোরের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছি। বৃহষ্পতিবার ঘর দখলের সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে মিরন খান কুয়েত থেকে আমাকে ফোন করে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছে।

এদিকে সরেজমিন বৃহষ্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, চৌধুরী বাড়ির বসবাস না করা আধাপাকা ঘরটিতে নতুন করে নতুন টিনের চাল ও লোহার দরজা জানালা লাগানো হয়েছে। স্থানীয় বেশ কয়েকজন জানান, বুধবার গভীর রাতে তারা লোকজন নিয়ে ঘরের কাজ করেছে। তারা বলেন, জমি ক্রয় করে থাকলে দিনের বেলায় কাজ করবেন। এভাবে রাতের আঁধারে কাজ করা বিষয়টি জোর পুর্বক দখলের নামান্তর।

প্রবাসী মিরণের খাণের বৃদ্ধা মা কুলছুমা বেগম জানান, এই ঘরটির জমি তাদের খরিদকৃত। বৃহষ্পতিবার ভোর থেকে লোকজন দিয়ে তারা নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছেন।

সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) নাছির উদ্দিন জানান, কয়েকমাস পুর্বে ঘর দখল প্রচেষ্টার লিখিত অভিযোগ করে প্রনব রায় চৌধুরী। তখন ঘটনাস্থলে গিয়ে দখলকারীদের কাউকে না পেলেও দুইজন নির্মাণ শ্রমিক আটক করি। পরে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায়। সর্বশেষ বৃহষ্পতিবার ৯৯৯ ফোন থেকে এধরনের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তবে সেই সময়ে কাউকে পাইনি।

বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেন জানান, ইতিপুর্বে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ ছিল। আজও ৯৯৯ ফোন সংবাদ আসলে তাৎক্ষনিক পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

ফেসবুকে মানব খবর…