গাজী মমিন,ফরিদগঞ্জ:
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ঈদের সময় ঘনিয়ে আসলেও বেচাকেনা না থাকায় দুশ্চিন্তায় কামারশিল্পীরা, তারপরেও রয়েছে তাদের ব্যস্ততা। চলছে হাঁপর টানা, পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা। হাতুড়ি পিটিয়ে কামাররা তৈরি করছেন দা, বঁটি, ছুরি,চাপাতিসহ ধারালো সব যন্ত্রপাতি। যদিও করোনা পরিস্থিতিতে বর্তমানে কোরবানীর হাটেও বেঁচা-বিক্রি নেই। বাজারেও নেই আগেরমত ক্রেতাদের ভীড়, তারপরও বেঁচা-বিক্রি হবে এ আশায় বুক বেঁধে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামারশিল্পীরা। হাতুড়ি আর লোহার টুংটাং শব্দে এখন মুখরিত কামারপাড়াগুলো।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়ালপুর কামারপাড়া,চরমান্দারী কামারপট্টি,গুপ্টি কামারপাড়া ও ফরিদগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে কামারদের অস্থায়ীদোকান গুলো ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে লোহার বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কামাররা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছেন সবাই।
কামারশিল্পী কৃষ্ণ কর্মকারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছরই কোরবানির ঈদে দা, বঁটি, ছুরি, হাঁসুয়া, চাপাতিসহ লোহার বিভিন্ন জিনিসের চাহিদা বেড়ে যায়। কোরবানির ঈদকে ঘিরে ভালো আয়-উপার্জন করে থাকেন তিনি। তবে এবার হতাশা ঘিরে ধরেছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে একেবারেই বেচাকেনা নেই বললেই চলে।
বেচাকেনা কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে কামারশিল্পী দুলাল চন্দ্র কর্মকার বলেন, কাস্টমারই নেই, আবার বেচাকেনা! আর কিছু দিন পর ঈদ। অন্যান্য বছর এই সময়ে জমে ওঠে দা-বঁটির বাজার। দা, বঁটি, ছুরি বানিয়ে কূল পাইনা, অথচ এবার বিক্রিই নেই। ক্রেতাই আসছেন না। সারাদিনে দুই-তিনটা দা-বঁটিও বিক্রি হয় না।
কামারশিল্পী বাবুল কর্মকার বলেন, এই ঈদ মৌসুমটাই আমাদের মূল টার্গেট থাকে। বছরের কয়েকটা দিন ভালো টাকা, ভালো উপার্জন করার চিন্তা করলে এই দিনগুলো ঘিরেই করা হয়। গত ঈদে কয়েক হাজার টাকা উপার্জন হলেও কারিগরদের বেতন দিয়ে খুব একটা থাকেনি। ভেবেছিলাম কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে দা, বঁটিসহ বিভিন্ন মালামালের বেশি অর্ডার আসবে। কিন্তু পরিস্থিতি এখন একেবারেই ভিন্ন।
প্রায় সকল কামার কামারশিল্পীদের একই রকম কথা জানান। এখন তাদের আশা, ঈদ এগিয়ে আসছে এখন যদি বিক্রি কিছুটা বাড়ে। সেই লক্ষ্যেই থেমে না থেকে একের পর এক যন্ত্রপাতি তৈরি করে চলেছেন তারা।
ফরিদগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে শনিবার সকালে ছবিতি তোলা হয়েছে।