মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
হাজীগঞ্জে গর্ভবতী মায়েদের গর্ভকালীন পরিচর্যা, প্রসব সেবা ও প্রসবোত্তার সেবা বিষয়ক ইনোভেশন কার্যকম ‘নিরাপদ মাতৃত্বে আমরা সবাই’ এর অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের পালিশারা গ্রামে তফুরুন্নেছা ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত অবহিতকরণ সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতকরণে গর্ভকালীন থেকে প্রসব এবং প্রসবত্তোনকালীন সময়ে মা ও শিশুর শতভাগ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাড়িতে ডেলিভারীর পরিবর্তে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ডেলিভারী হওয়ার বিষয়ে মা’দের অবহিতকরণের গুরুত্ব দিতে হবে।
নিরাপদ মাতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যদি উপজেলার সকল গর্ভবতী মা’দের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষিত কর্মীর (পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা) মাধ্যমে ডেলিভারী নিশ্চিত করাতে পারি, তাহলে মাতৃমৃত্যু ও নবজাতকের মৃত্যুর হার অনেকাংশ কমে আসবে। এছাড়াও অপ্রয়োজনীয় সিজার ও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে মায়েরা মুক্তি পাবে।
সভায় অনুষ্ঠানের সভাপতি ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে এসডিজি বাস্তবায়নে মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার কমানোর যে পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা হাজীগঞ্জ উপজেলায় ২০২২ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছে। এই পরিকল্পনাগুলো মধ্যে হলো, ২০২২ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার ৭০ এ কমিয়ে আনা। যা জাতীয় পর্যায়ে রয়েছে ১৭৬।
অপরদিকে নবজাতকের মৃত্যুর হার ১২ এবং ৫ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর হার ২৫ এ নিয়ে আসা। গর্ভকালীন সেবার হার ৬৫% এ উন্নীত করা। যা উপজেলায় ২০১৭ সালে ছিল ৩১%। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা কর্তৃক সম্পাদিত ডেলিভারী হার ৮ থেকে ৩০% উন্নীত করা এবং সিজারের হার ৫২% থেকে ২৫% নিয়ে আসা। বাড়িতে ডেলিভারীর হার ৩১% থেকে ২৫% নিয়ে আনা।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সুর্নিমল দেউড়ী। পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. মহিউদ্দিনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই কোরআন তেলওয়াত করেন, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. কাউছার আলম। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, তফুরুন্নেছা ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মাহমুদা আক্তার ও তানজিনা আক্তার।
এ সময় পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক মো. ইসমাঈল হোসেন, মোহাম্মদ আলী, ইমরান হোসেন ও সাইফুল ইসলামসহ পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকাসহ অন্যান্য কর্মকর্তা, জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।