নিজস্ব প্রতিনিধি:
নিষিদ্ধ ট্রাক্টর দিয়ে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ব্রিক ফিল্ড গুলোতে ফসলি জমির মাটি কাটার মহাউৎসব চালাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে দেখা যায় একই চিত্র। আইনের কোন নিয়ম নিতির তোয়াক্কা না করে নিষিদ্ধ ট্রাক্টর দিয়ে প্রতিনিহিত পারাপার করছে ফসলি মাঠের মাটি। তাদের ব্যবসায়িক দিক চিন্তা করে না আছে সময় না আছে তাদের মানবিক দৃষ্টি ভোঙ্গি। এতে করে দিন দিন ফসলি মাঠের টপ সয়েল মাটি উক্তলনের ফলে ফসল উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা কমে এসেছে। এসব অনিয়ম চিত্র যেন দেখার কেউ নেই। এদিকে যুগের বিবর্তনে যে ভাবে বাড়ছে মানুষ,সেই সাথে বাড়ছে বাসস্থানও। তাইতো মানুষ গ্রামের ভিটাবাড়ি থেকে বেরে এসে ক্রমান্বয় দখল করে রেখেছে খোলা মাঠ ময়দান। এক সময় এক এক ফসলি মাঠের আকার এদিক থেকে ওই দিক দেখা যেত না । বর্তমানে চোঁখে পড়ার মত উপজেলায় তেমন কোন বড় মাঠ নেই । এসব মাঠের অস্তিত দিন দিন হারাতে বসেছে।
পূর্ব থেকে দেখা যেত উপজেলার ফসলি মাঠগুলোতে কয়েক প্রজাতির ফসল উৎপাদন করতো কৃষকরা। গত কয়েক বছর ধরে একাধিক কোন ফসল উৎপাদন হতে দেখা যাচ্ছে না। হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ছোট বড় ফসলি মাঠের সংখ্যা প্রায় অধ্যশত। তবে উপজেলার উওর অঞ্চল তথা, রামপুর, কালোচোঁ, পিরোজপুর, রাজাপুর, ধড্ডা, পাতানিশ, রাজারগাঁওসহ প্রায় ২০/২৫ টি গ্রামের মাঠে এখনো দুই থেকে তিন ধরনের ফসল স্থানীয় কৃষকরা বছরে উৎপাদন করে থাকে। তবে উপজেলার দক্ষিন পূর্ব তথায় রামচন্দ্রপুর, বেলচোঁ, পালিশারা, আহম্মদপুর, মোহাম্মদপুর, কাকৈরতলা, হরিপুরসহ এসব এলাকায় বছরে শুধুমাত্র আবাদি ধান উৎপাদন হয়। একই উপজেলা দুই অঞ্চলে দুই ভাগে ফসল উৎপাদনের মূল কারন হচ্ছে ব্রিক ফিল্ড থাকা না থাকার কারনে। উত্তর অঞ্চলে তেমন কোন ব্রিক ফিল্ড না থাকায় তাদের মাঠের পরিমান এখনো সীমাবদ্ধ রয়েছে। সেই সাথে দুই থেকে তিন ধরনের ফসল ঘরে তুলতে পারে। আর দক্ষিণ অঞ্চলে তথা হাজীগঞ্জ -রামগঞ্জ সড়কের দুই পাশে একাদিক ব্রিক ফিল্ড, কৈয়ারপুল-ওলিপুর, মোহাম্মদপুর-হরিপুর ও কাশিমপুর এসব এলাকায় যেন ভেঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে একাদিক ব্রিক ফিল্ড। এসব অঞ্চলের ইটের জন্য মাটি সংগ্রহ মূলত আসে পাশের ফসলি মাঠ থেকে। চলতি বছরে মাটির দাম বেশী রেটে বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্রিক ফিল্ডের এক শ্রেনীর দালাল চক্র রয়েছে। এই ধরনের দালালরা জমির মালিকদের কাছে অর্থের লোভে ফেলে তাদের ফসলের টপ সয়েল মাটি বিক্রি করতে বাধ্য করে। মাঠের একটি ফসলের পাশে আরেকটি ফসলি মাঠ উচু নিচুর ফলে দেখা যায় পাশ্ববর্তী জমিটিও এক প্রকার বিক্রি করতে বাধ্য থাকে জমি মালিকরা। এসব কিছু যেন চিরচারিত নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে দক্ষিন অঞ্চলের জমির মালিকদের কাছে। গুটি কয়েকের সুবিদায় চরম দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে কৃষক, পথচারীসহ সাধারন মানুষ। এ বিষয়ে মোহাম্মপুর গ্রামের আলী হোসেন, হরিপুরের কামাল ও সোনাইমুড়ীর সাইফুল বলেন, চলতি বছরের খরায় কৃষি মাঠের ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ট্রাক যোগে ব্রিকফিল্ডে পালানো হচ্ছে। এতে করে ফসলের মাঠের পরিধি কমে যাচ্ছে এবং সেই সাথে অবৈধ ট্রাক্টর দিয়ে মাটি উত্তলনের ফলে মানুষের চলাচলের রাস্তাঘাট চরম ক্ষতি করে পেলেছে। এই ভাবে যদি কৃষি জমি থেকে মাটি উৎলন চলতে থাকে তাহলে উপজেলার দক্ষিণ অঞ্চলটি এক সময় নিচু ভূমিতে পরিনতের ফলে কৃতিম নদী হয়ে গড়ে উঠবে। তাইতো এ অঞ্চলের সাধারন কৃষকদের দাবি যেন ব্রিক ফিল্ডগুলোর সংখ্যা এ অঞ্চল থেকে কমিয়ে অন্য অঞ্চলে গড়ে তোলার অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে প্রায় ১৫ টি ইট ভাটা রয়েছে। তার মধ্যে মেসার্স রনি ব্রিকফিল্ড , অনি ব্রিকফিল্ড , সেলিম ব্রিকফিল্ড , মার্ক ব্রিকফিল্ড , মহিন ব্রিকফিল্ড, সৈয়দ আতিক শার্হ -১, সৈয়দ আতিক শার্হ -২ ব্রিকফিল্ড , এস এস বি ব্রিকফিল্ড , আ. গনি ব্রিকফিল্ড ও তালুকদার ব্রিক ফিল্ড চলমান রয়েছ। মেসার্স আ. গণি ব্রিকফিল্ড এর সত্ত্বাধিকারী মহসীন পাটওয়ারী বলেন, চলতি মৌসুমে খরা পেয়ে নির্ধারিত মাটি শেষ হওয়ার ফলে ট্রাক যোগে মাটি সংগ্রহ করতে হয়। হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোমেনা আক্তার বলেন, আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় নিয়মতান্ত্রিক পক্রিয়া ইট ভাটার অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে সচেষ্ট আছি।