বিশেষ প্রতিনিধি:
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহনে আগের নির্ধারিত ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
শনিবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর নিজ বাসভবন থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঢাকা জোনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এ তথ্য জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে দুই সিটে একজন যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু কিছু দিন ধরে বাস মালিকদের বিরুদ্ধে আসন পূর্ণ করেও বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ ওঠে।
এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, আগের ভাড়ায় ফিরে যেতে হবে নাকি বর্তমান ভাড়াই বহাল থাকবে, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠানো হবে। সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সেটাই মেনে চলতে হবে।
শনিবার ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং জনস্বার্থ বিবেচনা করে সরকার আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে গণপরিবহনে আগের নির্ধারিত ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার, চালকের সহকারী, টিকিট বিক্রয়কারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সাবান পানি অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। আসন সংখ্যার অতিরিক্ত কোনো যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। অর্থাৎ যত সিট তত যাত্রী পরিবহন নীতি কার্যকর হবে। দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।’
প্রতিটি ট্রিপের শুরু এবং শেষে যানবাহন জীবাণুমুক্ত করতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিয়ম এবং শর্ত মেনে পরিবহন চালাতে মালিক-শ্রমিকদের আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি যাত্রী সাধারণকেও মাস্ক পরিধানসহ নিজের সুরক্ষায় সচেতন থাকার অনুরাধ জানাচ্ছি।’
সেই সঙ্গে আইন অমান্যকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বিআরটিএকে নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা সবাইকে বিজ্ঞপ্তি আকারে জানিয়ে দেয়া হবে।’
এর আগে গত ৩১ মে সরকার আন্তঃজেলা বাস পরিষেবাসহ সব বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য মোট আসনের অর্ধেক যাত্রীকে নিয়ে যানবাহন চলাচলের শর্ত হিসেবে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দেখা যায়, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। ভাড়াও নেয়া হচ্ছে বর্ধিত হারে। এজন্য বিভিন্ন সংগঠন থেকে বর্ধিত ভাড়া বাতিলের দাবি ওঠে।
এ প্রসঙ্গে গত ২৫ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘সরকার করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়। গাড়ির আসন সংখ্যা অর্ধেক খালি রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে ভাড়া সমন্বয় করে এ সময়ের জন্য। শুরুতে কিছু পরিবহন প্রতিশ্রুতি মেনে চললেও এখন অনেকেই তা মানছেন না। ঈদের প্রাক্কালে স্পষ্টভাবেই নানা অভিযোগ এসেছে।’