শাহরাস্তি প্রতিনিধিঃ
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার ৬২নং আয়নাতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সাফায়েত হোসেন (কোভিড-১৯) করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে সাধারন মানুষকে রক্ষা করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শাহরাস্তিতে সর্বস্তরের জনসাধারণকে সচেতন করতে মাঠে কাজ যাচ্ছেন।
গুনী এ শিক্ষক, কোভিড ১৯ করোনায় শুরু হওয়ার প্রথম দিকে শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয়ের নির্দেশে তিনি তাঁর নিজ বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কে করোনায় মোকাবেলায় সচেতনতা সৃষ্টি করেন। পাশাপাশি নিজ গ্রামের জামে মসজিদ গুলোতে মুসুল্লিদের নিজ উদ্যোগে হাত ধোয়ার সাবান বিতরন করেন। এলাকায় রিক্সা ও ভ্যান চালক সহ অসহায় শতাধিক মানুষের মাঝে হ্যান্ড স্যানিটাইজার সামগ্রী বিতরন করেন।
চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাহাব উদ্দিনের নিদের্শে ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, এলাকার সচ্ছল ব্যক্তিদের এবং নিজ বেতনের আংশিক সহযোগিতায় দরিদ্র ৮৫ টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করেন।
এছাড়াও জেলা প্রশাসক চাঁদপুর মহোদয়ের নিদের্শে ত্রান যাবে বাড়ি কার্যক্রমে চিতোষী পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান মহোদয়ের নির্দেশে স্থানীয় উপকার ভোগীদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার মতো কাজে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছেন। স্থানীয় সুবিধা ভোগীদের নামের তালিকার তথ্য হাল নাগাদ করেন। প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনা মোতাবেক সামাজিক সংগঠন আয়নাতলী দুঃস্থ্য কল্যান ফান্ডের উপদেষ্টা হিসেবে গ্রামের ১৫০ টি অসহায়-দরিদ্র মানুষের বাড়িতে রাতের আঁধারে ইফতার সামগ্রী পৌঁছে দেন।
করোনা মহামারী শুরু হতে শাহরাস্তির দক্ষিন জনপদ চিতোষী পশ্চিম ইউপির সকল এলাকায় চেয়ারম্যান যোবায়েদ কবির বাহাদুর মহোদয়ের সাথে ইউনিয়নের সাধারন মানুষকে সচেতন করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন।
ইতিপূর্বে তিনি মহামারী করোনায় শাহরাস্তি তথা অন্য উপজেলার কোন ব্যক্তি করোনায় মারা গেলে জানাযা সহ দাফন কার্যে সহায়তা করার ঘোষনা দিয়ে ব্যাপক আলোচিত হয়েছেন। তার এমন ব্যতিক্রমী সাহসী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই। তিনি আরো বলেন পৃথিবীর যে, কোনো স্থানে করোনা আক্রান্ত শাহরাস্তি উপজেলার কোনো হতভাগা ব্যক্তি মৃত্যু বরন করলে, আমি প্রশাসনের সাথে থেকে তাঁর দাফন সম্পন্ন করতে সহায়তা করব। কেউ বাঁধা সৃষ্টি করলে আমি তাঁদের কে বুঝানোর ব্যবস্থা করাবো।
স্কুল শিক্ষক সাফায়েত হোসেন তার নিজের ফেসবুকে এমনি আবেগী স্ট্যার্টাস প্রকাশ করলে শাহরাস্তিবাসী অনেকে এ মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানান। ইচ্ছা করলে এ বিষয়ে যে কেউ তার ০১৭৪৩৯২৭৪৩৫ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করছেন। এদিকে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় শিক্ষক সাফায়েত হোসেন আয়নাতলী বাজার, উঘারিয়া বাজার, খেড়িহর বাজার, কোঁয়ার বাজার সহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিজে স্থানীয় চেয়ারম্যান মহোদয়ের সাথে মাইকিং করে মানুষকে অযথা বাহিরে ঘুরাফিরা না করে ঘরে থাকার আহবান জানান। পাশাপাশি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চিতোষী পশ্চিম ইউপির মসজিদ, ঈদ গাঁ জামে মসজিদসহ একাধিক মসজিদে সামজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ পড়তে জোরালো ভূমিকা রাখেন। তিনি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নিজে কাঁধে করে জীবানুনাশক স্প্রে করেন।
তিনি বলেন, আমি দরিদ্র পরিবারের সন্তান আমার বাবা একজন সৎ ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি মহামারী কালীন ঈদুল ফিতরের সময় নিজ উদ্যোগে স্থানীয় সচ্ছল ব্যাক্তিদের সহায়তায় এবং নিজের ঈদ বোনাসের আংশিক অংশ নতুন জামা কাপড় না কিনে ২৭ রমজানে বিদ্যালয়ের ১২৫ টি সহ এলাকার হত-দরিদ্র ১৫০ টি পরিবারের মাঝে সেমাই চিনি বিতরণ করেন।
এলাকার অভিভাবক ও গন্যমান্য ব্যাক্তিদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, এ মহামারীর সময়ে বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও সাফায়েত হোসেন স্যার প্রায় সময় শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে পড়াশোনার খোঁজ খবর নেন এবং শিশুদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার উপর গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।