নিজস্ব প্রতিনিধি:
আগামীকাল ১২ আগস্ট সোমবার মুসলিম উম্মাহর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে। যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আযহা। এ উৎসবকে ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহর থেকে মানুষজন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে লঞ্চ, স্টিমার, বাস ও ট্রেনে করে বাড়িঘরে ফিরছে। এবার ১৫ আগস্ট এবং ঈদের ছুটি একসাথে হওয়ায় অনেকটা লম্বা ছুটিই পড়েছে। তাই মানুষজন সময় নিয়ে স্বস্তিতেই বাড়ি-ঘরে আসতে পারছে।
বলতে গেলে এক সপ্তাহ আগ থেকে মানুষ যার যার কর্মস্থল থেকে বাড়ি-ঘরে আসা শুরু করেছে। উদ্দেশ্যে একটাই_পরিবার-পরিজন ও প্রিয়জনদের সাথে ঈদ করা। তাই উৎসবপ্রিয় মানুষের পদচারণায় মুখরিত শহর গ্রামাঞ্চল সর্বত্র। গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত লঞ্চ, স্টিমার, বাস ও ট্রেনে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। আজও থাকবে ভিড়। বাংলাদেশ রেলওয়ে ঈদ উপলক্ষে ২টি স্পেশাল ট্রেন সার্ভিস দিয়েছে। গতকাল ছিলো পবিত্র হজ্ব দিবস। আরাফাতের ময়দানে বিশ্বের কয়েক কোটি মুসলমান লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত করেছে। আগামীকাল বাংলাদেশের সর্বত্র ঈদ জামাতে সবাই তালবীয়া পাঠ করবেন।
এই ঈদের সাথে পশু কোরবানির বিষয়টি সম্পৃক্ত। তাই সামর্থ্যবানরা এ ঈদে হালাল পশু কোরবানি দেবেন। আবহাওয়া অনেকটা অনুকূলে থাকায় চাঁদপুর জেলার কোরবানির পশুর হাটগুলো সময়মতোই জমেছে। শুরুতে আশানুরূপ বিক্রি না হলেও গতকাল শনিবার থেকে বেচাকেনার ধুম পড়ে। আজ দিবা-রাত্রি চলবে সর্বশেষ বেচাকেনা। এবার গরুর দাম কিছুটা কম বলে ক্রেতারা জানান। তবে দেশি গরুর চাহিদা প্রচুর। চাহিদা অনুযায়ী আমদানিও ভালো।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খামারিরা চাঁদপুরে গরু নিয়ে আসে বিক্রির জন্যে। গরু-ছাগল বেচাকেনা করতে এসে চাঁদপুরে কেউই কোনো চাঁদাবাজের খপ্পরে পড়তে হয়েছে বলে শোনা যায়নি। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা এ বিষয়ে সর্বদা টহল জোরদার রাখে। ঈদুল আযহা উপলক্ষে জেলা শহরের ছোট-বড় শপিং সেন্টার ও মার্কেটগুলোতে বেচাকেনা কিছুটা কম হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার বেচাকেনা খুব খারাপ হয়েছে। কিছুটা ভিড় লক্ষ্য করা গেছে কসমেটিকস্ ও প্রসাধনী দোকানগুলোতে। সব মিলিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এখন ঈদের শেষ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে চাঁদপুরের প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও কোস্টগার্ড নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। বিভিন্ন ছোট-বড় মার্কেট, গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়, বাসস্ট্যান্ড ও লঞ্চ টার্মিনালে পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিশেষ করে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে এবার পুলিশের প্রশংসনীয় উদ্যোগে মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছে। লঞ্চঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি রোভার স্কাউট সদস্যদের যানজট নিয়ন্ত্রণে এবং শৃঙ্খলা রক্ষায় তৎপর থাকতে দেখা গেছে। তাদেরকে বয়োবৃদ্ধদের লঞ্চে উঠানামা করতে সহযোগিতা করতেও দেখা গেছে।
চাঁদপুর জেলা শহরের প্রধান প্রধান ঈদ জামাতে বরাবরের মতো এবারো সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। প্রধান প্রধান ঈদ জামাতে পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও থাকবে। শহরের প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ৮টায় পৌর ঈদগাহে। পৌর ঈদগাহসহ সকল ঈদগাহ ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে ঈদগাহে নামাজ হবে। আর আবহাওয়া যদি অনুকূলে না থাকে তাহলে ঈদগাহ সংলগ্ন মসজিদে ঈদের জামাত হবে। জেলা প্রশাসনের ঈদ প্রস্তুতি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।