• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:১২ পূর্বাহ্ন

বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দশ দলের কোচ

আপডেটঃ : শুক্রবার, ২৪ মে, ২০১৯

আগামী শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া মেগা ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী দশটি দল পুরোপুরি প্রস্তত।
কিন্তু যথার্থই বলা হয়ে থাকে বিশ্বকাপের মত টুর্নামেন্ট এক ব্যক্তির খেলা নয়। দলগুলোর মধ্যে থাকে সমন্বিত উদ্যোগ, ভাল পারফরন্সে করার তাগিদ এবং টিম স্পিরিট। এখানে কেবলমাত্র খেলোয়াড়দের বিষয় থাকে না। তাদের কোচিং স্টাফ, ম্যানেজমেন্ট এবং অন্যান্য কমিটিরও পরীক্ষা মেলে। নিজ নিজ দলের অবস্থা এবং দলকে বিজয়ী করতে একটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন কোচরা।
আসন্ন বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দশ দলের কোচদের প্রোফাইলের দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক।

#১ ফিল সিমন্স (আফগানিস্তান)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের একজন অলরাউন্ডার ছিলেন ফিল সিমন্স। যার ক্যারিয়ারের ব্যপ্তি ছিল ১৯৮৭-১৯৯৯।
খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেয়ার পর বিভিন্ন দেশে জাতি দলের একজন কোচ হিসেবে সাফল্য পেয়েছেন সিমন্স। ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ের প্রধান কোচ হিসেবে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে আসতে না পারা জিম্বাবুয়ের টেস্ট মর্যাদা পেতেও লড়াই করতে হয়েছে তাকে।
এরপর আয়ারল্যান্ড দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পান এবং এটা ছিল কোচিং ক্যারিয়ারে তার বড় টার্নিং পয়েন্ট। সিমন্সের অধীনে আয়ারল্যান্ড ১১টি ট্রফি জয় করে এবং আইসিসি’র বড় সব ইভেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। তার অধীনেই আইরিশরা ২০০৭ বিশ্বকাপে পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে, ইংল্যান্ডকে ২০১১ বিশ্বকাপে এবং ২০১৫ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়েকে হারায়। ২২৪ ম্যাচে আয়াল্যান্ডের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। যা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের কোচের স্বীকৃতি এনে দিয়েছে সিমন্সকে।
এরপর তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের কোচ হন এবং তার অধীনেই ক্যারিবিয়রা ২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করে।
২০১৭ সালে তিনি আফগানিস্তানের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পান।

#২ জাস্টিন ল্যাঙ্গার (অস্ট্রেলিয়া)
২০০০ শতকের শুরু এবং মাঝামাঝি সময়ে অস্ট্রেলিয়া দলের টেস্ট ওপেনিং ব্যাটসমান হিসেবে ম্যাথু হেইডেনের সঙ্গে সফল জুটি গড়েন এ বাঁ-হাতি। ১৯৯৩-২০০৭ পর্যন্ত ক্রিকেট খেলেছেন ল্যাঙ্গার।
২০১২ সালে তিনি ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ও পার্থ স্কোর্চার্সের কোচ হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৮ সালের মে মাসে তিনি অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের প্রধান কোচ নিযুক্ত হন।

#৩ স্টিভ রোডস (বাংলাদেশ)
ইংলিশ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান স্টিভ রোডস ক্রিকেট খেলেছেন ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার খুব বেশি সমৃদ্ধ না রোডস মাত্র ১১টি টেস্ট ও ৯টি ওয়ানডে খেলেছেন।
২০১৮ সালের ৭ জুন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাকে ২০২০ টি-২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়। তার অধীনে ২০১৮ সালের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজেকে ২-১ ব্যবধানে পরাজিত করে। যা ছিল ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টাইগারদের দ্বিতীয় ওয়ানডে সিরিজ জয়। এরপর টি-২০ সিরিজেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাজিত করে বাংলাদেশ। সম্প্রতি রোডসের অধীনে বাংলাদেশ প্রথমবারের মত বহু দলীয় টুর্নামেন্টের শিরোপা জয় করে। স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে আয়োজিত ত্রিদেশীয় সিরিজে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ।

ট্রেভর বেলিস (ইংল্যান্ড)
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটার ট্রেভর বেলিস কখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেননি।
তবে কোচ হিসেবে তার রয়েছে সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার। ২০০৪-২০০৭ পর্যন্ত তিনি নিউ সাউথ ওয়েলসের কোচের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি ২০০৭-২০১১ সাল পর্যন্ত বেলিস শ্রীলংকা দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেন। তার অধীনেই লংকানরা ২০১১ বিশ্বকাপে রানার্স আপ হয়।

#৫ রবি শাস্ত্রি (ভারত)
একজন অলরাউন্ডার হিসেবে ১৯৮১-১৯৯২ পর্যন্ত ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন রবি শাস্ত্রি। ব্যাটিং লাইনআপের বিভিন্ন পজিশনে খেলতে সক্ষম শাস্ত্রি ছিলেন ভারতীয় দলের অপরিহার্য্য অংশ। খেলোয়াড়ী জীবনে ভারতের হয়ে ৮০টি টেস্ট ও ১৫০টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। ১৯৮৫ সালে বিশ্ব ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নরশীপে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার লাভ করা ছিল তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত।
অবসর নেয়ার পর ২০১৭ সালে ভারতীয় দলের প্রধান কোচ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত ধারাভাষ্যকার।

#৬ গ্যারি স্টেড (নিউজিল্যান্ড)
নিউজিল্যান্ডের সাবেক টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান গ্যারি স্টেড ১৯৯৯ সালে নয় মাসে পাঁচ টেস্ট খেলেছেন।
এরপর আর কোন সুযোগ না পাওয়ায় শেষ হয়ে যায় তার খেলোয়াড়ী জীবন। এরপর বেছে নেন কোচিং পেশা। নিউজিল্যান্ড মহিলা ক্রিকেট দলের একজন সফল কোচ ছিলেন স্টেড। ২০১৮ সালের আগস্টে তিনি নিউজিল্যান্ড পুরুষ দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পান।

#৭ মিকি আর্থার (পাকিস্তান)
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটার মিকি আর্থার ১৯৮৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন। তখনোই দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাননি। তবে ২০০৫-২০১০ পর্যন্ত তিনি নিজ দেশের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেন। তার অধীনেই দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ স্থানের স্বাদ পায়। এমনকি দ্বিপাক্ষিক বহু সিরিজও জয় করে।

#৮ ওটিস গিবসন (দক্ষিণ আফ্রিকা)
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক অলরাউন্ডার ওটিস গিবসন ১৯৫-১৯৯৯ পর্যন্ত জাতয়ি দলের হয়ে খেলেছেন। তবে এ সময়ে মাত্র দুই টেস্ট ও ১৫টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। এরপরই কোচিং পেশা বেছে নেয়া গিবসন দুই বার ২০০৭-২০১০ এবং ২০১৫-২০১৭ পর্যন্ত ইংল্যান্ডে দলের বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ২০১০-২০১৪ পর্যন্ত তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা তাকে ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়।

#৯ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে (শ্রীলংকা)
এক সময় শ্রীলংকা দলের ওপেনিং ব্যাটসম্যান ছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ৯০ দশকের শুরুর দিকে রোশন মহানামার ওপেনিং পার্টনার ছিলেন তিনি। তার খেলোয়াড়ী জীবন শুরু হয় ১৯৯১ সালে এবং ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ওপেনার হিসেবে সনথ জয়সুরিয়ার আবির্ভাব ঘটার পর শেষ হয়ে যায়। এ সময়ে তিনি ২৬টি টেস্ট ও ৩৫টি ওয়ানডে খেলেছেন।
এক বছরের চুক্তিতে ২০০৫ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ পান হাথুরু। এরপর তিন বছরের চুক্তিতে কোচ হিসেবে নিয়োগ পান শ্রীলংকা এ’ দলের। ২০০৯ সালে ট্রেভর বেলিসের সহকারী হিসেবে ২০০৯ সালে জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। ২০১১ বিশ্বকাপে তিনি কানাডা জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন কোচিং পরামর্শক হিসেবেও কাজ করেছেন হাথুরু।
২০১৪ সালের মে মাসে হাথুরু বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ নিযুক্ত হন। তার অধীনেই টাইগাররা ভারত, পাকিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ জয় করে। এমনকি শ্রীলংকার মাটিতে লংকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয় করে বাংলাদেশ দল। টাইগাররা ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে পৌঁছে এবং ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলোর যোগ্যতা অর্জন করে।
২০১৭ সােলর ৯ নভেম্বর হাথুরু বাংলাদেশ দলের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। ৮ ডিসেম্বর নিজ দেশ শ্রীলংকার প্রধাণ কোচের দায়িত্ব নেন।

#১০ ফ্লয়েড রেইফার(ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
ওয়েস্ট ইন্ডিজের একজন অলরাউন্ডার ফ্লয়েড রেইফার জাতীয় দলের হয়ে ৬টি টেস্ট ও ৮টি ওয়ানডে খেলেছেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০৯ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত ছিল তার খেলোয়াড়ী জীবন।
চলতি বছর এপ্রিল মাসে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পান।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

ফেসবুকে মানব খবর…