• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন

বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য, মানব খবরের পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা

আপডেটঃ : রবিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৯

মুনছুর আহমেদ বিপ্লব:

চৈত্রশেষে নববর্ষের প্রথম দিন বা পয়েলা বৈশাখ। অন্যরকম একটি দিন। নববর্ষের লাল মানেই বাঙালি প্রাণে মনে এনে দেয় ভিন্ন ধরণের এক দ্যোতনা। দুর্দমনীয় চৈত্রের খরা পীড়িত দগ্ধ রোদের পরে সকল কালের বর্ণের হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান মুসলমান বাঙালির মনে বৈশাখ আসে বর্ণিল উৎসবের অমৃত সুধা গায়ে ছড়িয়ে দিয়ে। আমরা সকলেই জানি, বাঙালি উৎসব মুখর জাতি। হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত বাঙালির প্রাণের উৎসব যেনো আজ বৈশাখী উৎসব। বর্ষ বিদায় আর বর্ষবরণের পেছনে রয়েছে নানা রকম ইতিহাস, উদ্দীপনা ধর্ম বর্ণ আর সংস্কৃতির মাঝে মহা সম্মিলনের এক বার্তাবহ। গবেষকেরা বলে থাকেন, উৎসব হলো একটি প্রাচীন সাংস্কৃতিক রীতি। সামাজিক সংহতি সৃষ্টি এবং সমবেতভাবে বিনোদনে অংশগ্রহণ।

উৎসবকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে আমাদের ঐতিহ্য আর নানা আকারের প্রকৃতি বিধৌত সমাবেশে পরিবেশ চিহ্নিত হয়েছে। বাংলা নববর্ষকে ঘিরে আমাদের চলমান ইতিহাস ঐতিহ্য ও সমাজ সংস্কৃতির মাঝে অনেক ধরণের কথা বার্তা প্রচলিত আছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, গ্রামে গ্রামে যে উদ্দীপনায় বৈশাখ উদযাপিত হতো সেটা ছিলো সে সময়ের পরিস্থিতি এবং সামাজিক মানসিক সাংস্কৃতিক ও মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা ও দাবীর সাথে সম্পৃক্ত রেখে। সে সময়কালে গ্রামে গ্রামে মেলা হতো, হতো গরুর দৌড়, মোরগের লড়াই,গম্ভীরা গান, যাত্রা, জারি, সারি, কবিগান। আর এসব কিছু নিয়েই চলতো উৎসবের আয়োজন। এখনো আমাদের দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ফিরে মেলা বসে। সেই মেলা থেকে সারা বছরের প্রয়োজনীয় পন্য সামগ্রী সংগ্রহের তাগিদটাও কম গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।

আর পাশ্চাত্যে ১ জানুয়ারি থেকে ইংরেজি নববর্ষের প্রচলন শুরু হয়। যা ক্রমে ক্রমে পাশ্চাত্য ছাড়িয়ে প্রাচ্যেও সার্বজনীনতার রূপ পেয়েছে ধর্ম বর্ণের উর্দ্ধে ওঠে। এভাবেই এদেশে সার্বজনীনতার রূপ পরিগ্রহ করে পুর্ণিমা, খৃস্টানদের বড়দিন, চাকমা, আদিবাসীদের মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বিজু বা বৈসাবি উৎসব। এই বৈসাবি উৎসব বৈশাখি সাংগ্রাই বা বিজু তিন সম্প্রদায়ের ভিন্ন ভিন্ন উৎসব একই আংগিকে বৈচিত্র্যধর্মী মাত্রা যোগ করে। যা বৈশাখ এলেই সার্বজনীন উৎসবের ছোঁয়ায় দেশি বিদেশি পর্যটক সহ সকলের জন্য অন্যরকম নান্দনিকতা নিয়ে আসে এই বৈসাবি। সেই হিসেবে যদি আমরা ধরি, ঈদ উৎসব মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব হলেও সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক দর্শনের ক্ষেত্রে বিপুল বৈভবে সব পর্যায়ের জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে।

ঠিক তেমনি করে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজা, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বৌদ্ধ পূর্ণিমা, খ্রিস্টানদের বড়দিন উদযাপনের মধ্যে সার্বজনীনতা ছড়িয়েছে নানা ভাবে।সবগুলো ধর্মীয় উৎসবকে ছাপিয়ে বাংলাদেশে বাংলা নববর্ষকে ঘিরে আবর্তিত বৈশাখী মেলা ও উৎসবের আয়োজন হয়ে ওঠেছে এক নয়নাভিরাম ও অভূতপূর্ব দৃশ্য । যা মানুষে মানুষে কালো সাদা সকল বর্ণ গোত্রকে এক করে সারাদেশের গ্রাম প্রান্তর ছড়িয়ে দিয়ে এমন এক অমিয় সুধা ছড়িয়ে দিয়েছে বাঙালির মনে প্রাণে। রবীন্দ্রনাথ ও নজুরলের অসাম্প্রদায়িক চেতনার ওপর ভর করে বাংলা নববর্ষ ও বৈশাখ খুঁজে পেয়েছে তাঁর আসল ঠিকানা। যেমন রবীন্দ্রনাথের উচ্চারিত কথমালায় বৈশাখের ঘুম ভাঙা সকালে শিল্পীরা গেয়ে ওঠেন এসো এসো ,এসো হে বৈশাখ /তাপস নি:শ্বাস বয়ে মুমূর্ষরে দাও উড়ায়ে,/ বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক। ঠিক সেভাবেই নজরুলের বৈশাখ বরণের জয়ধ্বণি প্রকাশ পায় কবিতায় গানে-ঐ নূতনের কেতন ওড়ে /কালবোশেখীর ঝড়/তোরা সব জয়ধ্বনি কর ।

বাঙালি সংস্কৃতিতে বৈশাখী মেলা ও উৎসব যেনো নতুন আবহ ও ভিন্ন এক দ্যোতনার সমারোহ। এইমেলা ও উৎসব বিগত কয়েক বছর ধরে বাঙালি সংস্কৃতিকে জাগিয়ে দিয়েছে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে। জানা যায়,একসময়ে পূর্ববঙ্গে বা বাংলাদেশে জমিদারি প্রথা প্রচলনের পর জমিদারি স্টেটে পূণ্যাহ এবং ব্যবসায়িদের মধ্যে হালখাতা বিষয়ক প্রথা প্রবর্তিত হয়। যা পার্বত্য অঞ্চলে আজো দেখা যায়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরও থেমে থাকেনি এইসব ধারাগুলো। মজার ব্যাপার হলো, বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশের ক্রমবর্ধমান প্রবহমান ধারা পূর্ণমাত্রা লাভ করে ১৯৫৪ সালে যুক্রফ্রন্ট সরকার পাকিস্তানের নির্বাচনে জয়লাভ করে বাংলা নববর্ষকে সাধারণ ছুটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে। এতে করে পুরো পাকিস্তান জুড়ে শহর পেরিয়ে বন্দর গ্রাম গঞ্জ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এর মাদকতা। ওই সময়টাতে বাংলা নববর্ষ লাভ করে ভিন্ন মাত্রিকতা। প্রসংগক্রমে জানা যায়, ১৯৬৭ সন থেকেই ঢাকার রমনা বটমূলে ছায়ানটের সূচনায় নববর্ষ উদযাপনের বহুমাত্রিকতা ব্যাপক ভাবে সারাদেশে আলোড়ন তোলে। বাংলা ভাষাভাষী সকল মানুষের মনে বৈচিত্র্যপূর্ণ এক ভাবধারা নির্মিত হয় ওই সময়টাতে। দেশের প্রতীক হয়ে সকল ধর্মের মধ্যে সেতুবন্ধন হয়ে ধর্মনিরপেক্ষ উৎসবে পরিণত হয়। যা পরবর্তীতে ইতিহাসের পাদপীঠে স্থান লাভ করে বাঙালি সংস্কৃতিক উৎসব ঐতিহ্যের এক নান্দনিক প্রতীক রূপে স্থান করে নিয়েছে । এখন পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ধারায় প্রেক্ষাপট বদলে গ্‌িেয় দেশের আর্থ সামাজিক লোকজ প্রাচীন ও বর্তমান সংস্কৃতির মেলবন্ধন গড়ে সূচনা করে দিয়েছে মহামিলনের উৎসবের। সেই বিষয়বস্তুর প্রেক্ষিত গুলো আলোচিত হয়েছে পরবর্তী ধাপে ধাপে।

উৎপত্তি ও বিকাশে নববর্ষ
বেশির ভাগ বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞের মতে মোগল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তক।সম্রাট আকবর সিংহাসনের আরোহণের পর হিজরি ৯৬৩ সালে বাংলা নববর্ষের সূচনা হয়। এ সময় তাঁর বিজ্ঞ রাজ জ্যোতিষী আমীর ফতেহ ঊল্লাহ সিরাজীকে নির্দেশ দিলে তিনি সবিশেষ পরিশ্রমের মাধ্যমে হিজেরী সন বা চন্দ্র বৎসরকে চতুরতার সাথে সৌর বৎসরে পরিণত করেন। মূলত এর সূচনা হয়, ১৫৫৬ খৃষ্টাব্দের পর থেকে। তারই ধারাবাহিকতায় চন্দ্র বৎসরের সাথে মিল রেখে অত্যন্ত সুকৌশলে ১৫৮৪ খৃষ্টাব্দের ১০/১১ মার্চ এ ফসলী সন বা বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি ঘটে। যা বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত হয়। এর মাধ্যমেই ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে যাত্রা শুরু করে বাংলা সন। যার শুরুটা ছিলো পয়লা বৈশাখ দিয়ে। জানা যায়, এ ফসলী সন চালুর পর থেকে কৃষিকাজ নির্ভরতাকে কেন্দ্র করে গ্রাম গঞ্জের ব্যবসায়ীরা হিসাবের খাতা খুলতেন নববর্ষের শুরুতে। এর ব্যাপক প্রচলন হয়ে ওঠে খাজনা আদায়ের সূচনা মাস হিসেবে।

আকবরের আমলে প্রচলিত বাংলা নববর্ষের শেষ দিকে বা চৈত্রমাসে ভূস্বামীরা প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করতেন। জমিদারি বিলুপ্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই প্রথা বলবৎ ছিলো । তবে আমাদের সরকারি ব্যবস্থাপনাতে এখনো ভূমির খাজনা আদায় করা হয় বাংলা সন তারিখ ধরে। হিসাব ও সেই ভাবে প্রচলিত আছে। আকবরের রাজ সভা থেকে হিজরী সন পরিবর্তনের মাধ্যমে বাংলা সনের যে অভূতপূর্ব বিস্তার লাভ করেছিল তা বাঙালির মন মননে এমনই এক হৃদয়গ্রাহী বিষয়বস্তু জীবন্ত উন্মাদনা হিসেবে প্রতিভাত হয়েছে। যার বিস্তার বাংলা ভাষাভাষি মানুষের মধ্যে এতোটাই সুনিপুণ ভাবে প্রোথিত হয়েছে তা থেকে চোখ ফেরাবার কিছুই নয়। বলা চলে, সংস্কৃতির ধারা প্রবাহমান গতিতে এতোটাই বিকশিত হয়েছে যে, সকল সংকীর্ণতার উর্ধ্বে ওঠে আমাদের নিয়ে গেছে অসাম্প্রদায়িক নিরেট এক বাঙালি সংস্কৃতি লালনের মধ্য দিয়ে। যার রেশ এখনো বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে । গ্রাম গঞ্জ শহরের সীমা পেরিয়ে প্রতিটি পাড়া মহল্লা উপত্যকা পার্বত্য সমতল অসমতল ভেদ অভেদের সীমা ছাড়িয়ে।এ বিকাশমান ধারা কেউ কখনো রুখে দিতে সক্ষম হবে না যদি সে বাঙালি সংস্কৃতির অস্থিমজ্জ্বার সাথে বেড়ে ওঠা নাগরিক হয়।
চৈত্রশেষে সংক্রান্তি
বাংলা নববর্ষের আরেক নান্দনিকতা ছড়িয়ে উৎসব মুখরতা নিয়ে আসে চৈত্রশেষে সংক্রান্তির মেলা ও আয়োজনের মাধ্যমে। চৈত্রের শেষ দিনে আমাদের প্রতিটি অঞ্চলে চারিদিকে শোরগোল , মেলা খেলার আয়োজন থাকে। সবচাইতে বড়ো ব্যাপার হলো ,চৈত্রের প্রথম প্রহর থেকে ঘরদোর ঝেড়ে মুছে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে ফেলা হয়। এই দিনে গ্রাম গঞ্জে নানা মেলা ও খেলার আয়োজন হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি দেশের বড়ো বড়ো শহর গুলো বিশেষ করে ঢাকা চট্টগ্রম সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দিন ব্যাপী আনুষ্ঠানিকতায় ভরপুর থাকে। চৈত্র সংক্রান্তির মাধ্যমে নববর্ষের উৎসবের আমেজ তৈরী হয়ে যায় ভিন্নতা। নানা চিত্তবিনোদনের পসরায় ব্যাপৃত চৈত্র সংক্রান্তির মেলা ও মঞ্চের আনুষ্ঠানিকতায় থাকে নাচ,গান ,নাটক।উৎসব মুখরতার আমেজ এ দিনেই জনগণের মধ্যে সূচিত করে বর্ষবরনের আগাম সংকেত। সারা বছরের ক্লান্তি জড়তা মুছে ফেলার প্রক্রিয়ায় এ দিনটিকেও বাঙালি স্মরণীয় বরণীয় করে রাখে। ঢাকার ছায়ানট, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন সহ সারাদেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন আড্ডা ও আনুষ্ঠানিকতায় পুরাতন বর্ষকে বিদায় জানায় এ দিনে। তবে আগেকার দিনের গ্রামের রুচি ও সংস্কৃতির সাথে পালাবদল ঘটেছে শহুরে সংস্কৃতির আয়োজনের ভিন্নতায় ।
হালখাতা
পুরাতন বছরের হিসাব বন্ধ করে নুতন বছরকে সামনে রেখে পয়লা বৈশাখ থেকে ব্যবসায়ীরা হিসাব নিকাশ করার জন্য লাল কাপড়ে মোড়ানো খাতা খুলে থাকেন হালখাতা হিসেবে। দোকানি ব্যবসায়ীরা পুরনো হিসাব নিকাশের পাঠ চুকিয়ে নতুন করে হিসাব উত্তোলনের জন্য হাল নাগাদ হিসেবের জন্য খোলা খাতাই হালখাতা। তৎকালীন জমিদাররাই এই প্রক্রিয়ায় হালখাতার প্রচলন করেন। ১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয়ে যাবার পর হালখাতা আয়োজনে অনেকটা ভাটা পড়ে। এরপরেও হালখাতার আনুষ্ঠানিকতা এখনো ফুরিয়ে যায়নি। এখনো হালখাতার জৌলুস বিদ্যমান আছে আমাদের দেশের পুরনো ব্যবসায়ী কেন্দ্র ও স্বর্ণপট্টি গুলোতে। পুরনো ঢাকার লক্ষ্ণীবাজার, তাঁতী বাজার, শাঁখারী বাজার, চট্টগ্রামের হাজারি গলি ও খাতুনগঞ্জ সহ এখনো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের স্বর্ণপট্টি এবং আড়ত গুলোতে হালখাতার ঘটা করে আয়োজন থাকে। স্বর্ণের দোকান গুলোতে নারী ক্রেতাদের ভীড় থাকে। থাকে উৎসব উৎসব ভাব। ইদানীং ক্রেতাদের দাওয়াত কার্ড বিতরণের পালাও থাকে হালখাতা উৎসবে। থাকে ক্রেতাদের পাওনা পরিশোধের পর্ব। চলে মিষ্টি মুখ করানোর ধুম।এখনো গ্রামে গঞ্জে হালখাতার রেশ খুঁজে পাওয়া যায়। এখনো গ্রামীণ নাগরিকদের কাছে হালখাতার দিনটি বিশেষ তাৎপর্যময় পরিবেশের সৃষ্টি করে।

নববর্ষের আমেজ রক্ষা করতে সবার ঘরে ঘরে মিষ্টান্ন না হলে চলে না। উপাদেয় খাবার আর রসনা বিলাসে বাঙালির চিরাচরিত অভ্যাস রক্ষা করতে কোন এক ফাঁকে ইলিশও হয়ে ওঠে নববর্ষের প্রাণ। তবে বৈশাখের ইতিহাসের সাথে এর কোন সম্পর্ক অবশ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবুও নববর্ষে পান্তা ইলিশ আর রকমারি খাবারের আয়োজন নিয়ে বড় বড় শহর গুলোতে নামকরা রেস্তোরাঁয় আজকাল হিড়িক পড়ে যায় ক্রেতাদের । সকাল থেকে রাত অবধি যেনো অন্যরকম একটি আবহ কাজ করে নববর্ষের এই দিনটিতে। এমনিতেই উৎসব মুখর এই জাতি বর্ষবরণের বাতাবরণে বাঙালি সত্তার বিকাশ যেনো আরো পূর্ণতা পেয়েছে বৈশাখের প্রতিটি অনুষঙ্গে। কী নেই নববর্ষে, গ্রাম গঞ্জের যাত্রা পালা, গম্ভীরা, জারি,সারি,পুতুল নাচ আর রবীন্দ্র নজরুল লালন হাসন ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া গানে মাতোয়ারা হয়ে একাকার হয়ে যায় আমাদের বাঙালিয়ানা। সেই সাথে প্রতিটি সংবাদপত্রের বিশেষ সংখ্যা, চ্যানেলগুলোতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মাদকতায় আবিষ্ট হয়ে যায় গণমানুষ এই নববর্ষে । আর তাই, প্রতি বছর প্রতিটি দিন যেনো বাঙালির জীবনে বিমূর্ত প্রতিচ্ছবি হয়ে ধরা দেয় উৎসক বাংলা ভাষাভাষী প্রতিটি মানুষের মন মননে, সেটাই বলে দেয় নববর্ষের প্রেক্ষাপট ইতিহাস ঐতিহ্য আর পটভূমিতে।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

ফেসবুকে মানব খবর…