বিশেষ প্রতিনিধিঃ
আজ ৭ মে বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের কাছে একটি স্মরণীয় দিন। ২০০৭ সালের ৭ মে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারঘোষিত জরুরি অবস্থা চলাকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা শেষে শত প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে বাংলাদেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
সে সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যাতে দেশে ফিরতে না পারেন সেজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার এক অবৈধ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
কিন্তু সাহসী শেখ হাসিনা তৎকালীন সরকারের বেআইনি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেশে ফেরার ঘোষণা দেন। অবৈধ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে বিশ্বব্যাপী। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে শেখ হাসিনার ঐকান্তিক দৃঢ়তা, সাহস ও গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর চাপে তদানীন্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়।
৭ মে শেখ হাসিনা ঢাকায় ফিরে এলে লাখো জনতা তাকে সাদর অভ্যর্থনা জানায়। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে মিছিল শোভাযাত্রা সহকারে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে নিয়ে আসা হয়। দেশে ফিরে জনগণের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় শুরু করেন নতুন সংগ্রাম।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ হয় দেশবাসী। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনাকে সাজানো মামলায় গ্রেফতার করে।
২০০৮ সালের ১১ জুন প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে কারান্তরীণ রাখা হয়। প্যারোলে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ গমন এবং চিকিৎসা শেষে ৪ ডিসেম্বর স্বদেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। অতঃপর গণতন্ত্রের শেখ হাসিনার সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে ব্যাপক আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। আন্দোলনের মুখে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় জোরপূর্বক রাষ্ট্র ক্ষমতায় চেপে বসা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। শুরু করেন সংকটের আবর্তে নিমজ্জমান অবস্থা থেকে দেশকে পুনরুদ্ধার করে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তোলার সংগ্রাম। দিন বদলের অভিযাত্রায় উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম এবং উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জনের ইতিহাসে ৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। বাংলাদেশ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন ৭ মে উপলক্ষে প্রতিবছর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। কিন্তু এ বছর বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে সৃষ্ট সংকটে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে সব ধরনের জনসমাগমপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পরিহার করে আসছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
৭ মে উপলক্ষে বাঙালির চিরঞ্জীব আশা ও অনন্ত অনুপ্রেরণার উৎস শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে ঘরে বসেই পরম করুণাময়ের নিকট বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার নির্দেশনা প্রতিপালনের মধ্যদিয়ে করোনা সংকট মোকাবিলায় চলমান কর্মোদ্যোগকে আরও গতিশীল করে প্রিয় নেত্রীর প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।