নিজস্ব প্রতিনিধি :
তীব্র গরমে একেবারে অতিষ্ঠ মানুষ। এর মাঝে চলছে রোজা মাস। ইফতারিতে এক টুকরো তরমুজ যেন দারুণ তৃপ্তি দেয় রোজাদারদের। কিন্তু মতলব উত্তরে তরমুজ যেন এবার ‘বড় লোকের ফল’। মাত্র সপ্তাহ দশেক আগে মতলব উত্তরে মধ্যম সাইজের (৪-৫ কেজি ওজন)একটি তরমুজ বিক্রি হত ৮০-১০০ টাকায়, বর্তমানে ওই সাইজের একটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকায়। এমন দামে ক্রেতারা বলছেন, মতলব উত্তরে তরমুজ এবার যেন ‘বড় লোকের ফল’। মঙ্গলবার মতলব উত্তরের বিভিন্ন জায়গায় এমন দামে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, রমজান মাসের আগেও মতলব উত্তরে তরমুজের দাম তেমন বেশি ছিল না। ছোট সাইজের একটি তরমুজ ৫০-৮০, মধ্যম সাইজের ৮০-১০০ কিংবা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। আর বড় সাইজের তরমুজের দাম ছিল ১৫০-২০০ টাকার মধ্যে। রোজা মাস শুরু হতে না হতেই ফল ব্যবসায়ীরা তরমুজের দাম বাড়িয়ে দেন কয়েকগুণ। বর্তমানে তরমুজের আকাশচুম্বী দামে ক্রেতারা একবারে দিশেহারা। এজন্য অনেকেই ফেসবুকে শুরু করেছেন তরমুজের দাম নিয়ে সমালোচনা। এমন সমালোচনা শুরু হলেও সোমবার পর্যন্ত মতলব উত্তরে প্রশাসনের কোন অভিযান কিংবা তদারকি করতে দেখা যায়নি।
মঙ্গলবার ছেংগারচর বাজার, কালিপুর বাজার, মোহনপুর বাজার, নতুনবাজার’সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে, তরমুজের দাম আকাশচুম্বী। ছেংগারচর বাজারে একাধিক ফল ব্যবসায়ী তরমুজ বিক্রি করতে বসে আছেন। ৪-৫ কেজি ওজনের একটি তরমুজের দাম হাকেন সাড়ে ৫০০ টাকা। এর চেয়ে বড় সাইজের একটি তরমুজের দাম জিজ্ঞেস করলে ৬০০ টাকা চান।
ফল বিক্রেতা আবদুল হান্নান বলেন, আড়ত থেকেই আমরা বেশি দাম দিয়ে কিনে এনেছি। তাই দাম বেশি চাচ্ছি। ছেংগারচর বাজারে ফলের দোকানে তরমুজ কিনতে আসেন ব্রাহ্মণচক গ্রামের শহিদুল ইসলাম খোকন। কিন্তু তরমুজের অস্বাভাবিক দাম শুনে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। তিনি বলেন, ইফতারিতে এক টকুরো তরমুজ অনেকটা তৃপ্তি দেয়। কিন্তু দামের কারণে সেই তৃপ্তি আর মেঠানো গেল না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তরমুজের দাম বেশি সম্পর্কে আড়ৎদার আবুল হোসেন বলেন, মূলত তরমুজ ক্ষেত হয় খুলনা, বাগেরহাট ও ভোলা জেলায়। কয়েকদিন আগে বৃষ্টির বেশি পানিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য দাম এবার বেশি। আজ মঙ্গলবার বড় সাইজের তরমুজ প্রতি পিস সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা ও মধ্যম সাইজের তরমুজ ২৫০ টাকায় পাইকারি দামে তিনি বিক্রি করেছেন বলে জানান।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ অনুযায়ী, ফলের ক্ষেত্রে কেজিতে ১০ টাকা লাভ করতে পারবেন, এমন বিধান রয়েছে। তবে তরমুজের ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা আছে। কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকার বেশি লাভ করতে পারবেন না। আর কেজি বা পিস যেভাবে কিনবে সেভাবেই বেচতে হবে। কিন্তু মতলব উত্তরের ফল ব্যবসায়ীরা এমন নিয়ম মানছেন না বলে রয়েছে অভিযোগ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান বলেন, বাজারের সার্বিক বিষয়টি তদারকি করছি। বেশি দামে বিক্রি করলে ওই ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।