বিশেষ প্রতিনিধিঃ
গার্মেন্টস শ্রমিকদের অব্যাহত ছাঁটাই ও মিথ্যা মামলায় শ্রমিক হয়রানি বন্ধ এবং বাজেটে শ্রমিকের রেশনিং-বাসস্থানের জন্য অর্থ বরাদ্দের দাবিতে শনিবার (৬ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।
সমাবেশ থেকে অভিযোগ করা হয়, করোনা সংক্রমণের ঝুকি নিয়েই শ্রমিকরা কাজ করছে কিন্তু কাজ করতে গিয়ে আক্রান্ত হলে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পরিবর্তে উল্টো চাকরি হারাচ্ছে। একদিকে জ্বর-সর্দির জন্য শ্রমিককে ছুটিতে পাঠিয়ে আর কাজে নেয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে আক্রান্তরা চিকিৎসাও পাচ্ছেনা। ফলে বাধ্য হয়ে শ্রমিকদের উপসর্গ লুকাতে হচ্ছে।আজ শ্রমিক বিক্ষােভ বিষ্ফোরনের দিকে যাচ্ছে, যার জন্য মালিকদের দায়ি করেন তারা।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র’র সভাপতি শ্রমিকনেতা মন্টু ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা জলি তালুকদার, কেন্দ্রীয়নেতা দুলাল সাহা, এমএ শাহীন, মঞ্জুর মঈন, ড্রাগন সোয়েটার কারখানার শ্রমিক আব্দুল কুদ্দুস, অজন্তা এপারেলস কারখানার শ্রমিক রিনা আক্তার, প্যারাডাইস ক্যাবল কারখানার শ্রমিক আব্দুল কাইউম প্রমূখ।
সমাবেশে শ্রমিকনেতা জলি তালুকদার বলেন, মালিকরা কাজ নেই অযুহাতে সরকারের কাছ থেকে শ্রমিকের বেতন বাবদ আর্থিক সুবিধা আদায় করেছে। পরবর্তীতে আবার শ্রমিকের সেই বেতন-বোনাস কেটে নিয়েছে। তারা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেই চাকুরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে শ্রমিকদের দফায় দফায় কাজে যোগ দিতে বাধ্য করেছে। অন্যদিকে ছাটাই, নির্যাতন অব্যাহত ভাবে চলছে। তিনি বলেন, এখন পাওনা বঞ্চিত করে ছাটাই করতে শ্রমিকের আইনগত সুরক্ষা শিথিল করার জন্য সরকারের কাছে মালিকরা দেনদরবার চালাচ্ছে। তিনি বলেন, মালিকপক্ষ বিরাট অংকের আর্থিক সুবিধার জন্য দরকষাকষি করছে এবং শ্রমিক ছাটাই এর হুমকি তাদের দরকষাকষির বড় হাতিয়ার।
জলি তালুকদার অভিযোগ করেন, সরকার মালিকদের কথায় উঠবস করে। তারা মালিকদের আবদার মেনে বেতন কর্তনসহ একের পর এক শ্রমিক বিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি বলেন এমন বৈশ্বিক মহামারীতে যারা শ্রমিকদের ওপর ইতিহাসের নিকৃষ্টতম জুলুম চালিয়েছে তাদের একদিন অবশ্যই কাঠগড়ায় দাড় করানো হবে। তিনি বলেন, মহামারীকালে শ্রমিকদের ওপর আর কোন জুলুম হলে ধর্মঘটসহ কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে শ্রমিকনেতা মন্টু ঘোষ বলেন, মালিক সমিতির সভাপতির বক্তব্য উদ্দেশ্যমূলক এবং শ্রমিক নির্যাতনের উস্কানি ছাড়া আর কিছুই নয়। তার ছাটাই এর ঘোষণা শ্রমিকরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। মালিকরা যে কথা বলে লক ডাউনের মধ্যে কারখানা খুলেছেন সেই অবস্থার কোন পরিবর্তন হয় নাই। কোন অবস্থাতেই শ্রমিক ছাটাই বরদাস্ত করা হবে না। তিনি এই সময়কালে আন্দোলন করা শ্রমিকদের নামে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও হয়রানি বন্ধের দাবি জানান। তিনি আগামী বাজেটে শ্রমিকের রেশনিং ও বাসস্থানের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে পল্টন মোড় ঘুরে মুক্তি ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুনছুর আহমেদ বিপ্লব, মোবাইল: ০১৬১৫৩৩৪৩৭৩, ইমেইল: manobkhabornews@gmail.com