রাফিউ হাসানঃ
চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে মৃত গৃহবধুর পিতা মোঃ রুহুল আমিন বাদী হয়ে জামাতা নুরুল ইসলামকে বিবাদী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং ০২/২০২০, তারিখ-০২/০৬/২০২০ইং, ধারা-৩০৬। থানা পুলিশ অভিযুক্ত নুরুল ইসলামকে আটক করেছে।
ঘটনাটি ২ জুন মঙ্গলবার ভোর ৫টায় উপজেলার পৌর ৭নং ওয়ার্ডের নিজ মেহার ঢ়াড়ি বাড়িতে ঘটে।
জানা যায়, ওই বাড়ির আমিরুল ইসলামের পুত্র নুরুল ইসলাম (৩৬) প্রায় ১০ বছর আগে একই উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিন ইউনিয়নের ঘুঘুরচপ নতুন বাড়ির রুহুল আমিনের কন্যা খালেদা আক্তার কমলা (২৮) কে শরীয়ত মতে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের সুখের সংসারে দুটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহন করে। বড় ছেলে আতিকুল হাসান মাহি (৮) এবার ৩য় শ্রেনীতে আর ছোট ছেলে নাহিদ (৫) শিশু শ্রেনীতে পড়ছে। ঘটনার বেশ কিছু দিন আগ থেকেই স্বামী নুরুর পরকীয়া প্রেম সংক্রান্ত ঝামেলা চলছিলো কমলার সাথে। এরপর থেকেই কমলা রহস্যজনক ভাবে অসুস্থ্য হতে থাকে এবং কুমিল্লায় চিকিৎসা চলাকালিন মৃত্যু বরণ করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, নিহত কমলাকে তার স্বামী পরিবার গত ২৫ মে সোমবার অসুস্থ্যতা জনিত কারনে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে রোগী ভর্তির রেজিস্টারে পেট ব্যথা নোট করা ছিলো। তার ৩ দিন পর ২৮ মে বৃহস্পতিবার কমলাকে আবার হাসপাতালে নেয়া হয়। সেদিন একই রেজিস্টারে বিষ প্রয়োগে অসুস্থতার কথা নোট করে রোগীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
মামলার বাদী মোঃ রুহুল আমিন বলেন, আমার মেয়ে কমলাকে তার স্বামী নুরুল ইসলাম বিগত ২ বছর ধরে নানা ভাবে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন করতো। নুরু প্রায়ই বলতো সে আবার বিয়ে করবে। পাশের বাড়ির এক মেয়ের সাথে তার পরকীয়ার কারনেই বেশি ঝামেলা হতো। গত মাসের ২৮ তারিখ তারা আমাদের জানায়, কমলা অসুস্থ্য। তাকে কুমিল্লা নিতে হবে। কমলা কি কারনে অসুস্থ্য তারা জানায় নি। আমার স্ত্রী মুরশিদা বেগম মেয়ের সাথে কুমিল্লা যায়। ৪ দিন পর চিকিৎসাধিন অবস্থায় কমলা মারা যায়। মৃত্যুর পর বেরিয়ে আসে ঘটনার নানা রহস্য। আমি আমার মেয়ের এমন মৃত্যুর জন্য জড়িত অপরাধীদের সঠিক বিচারের আাশায় মামলা দায়ের করেছি।
নিহত গৃহবধুর স্বামী নুরুল ইসলাম বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে হত্যা করিনি। সে শুধু বমি করতো। শাহরাস্তি সরকারী হাসপাতালে নিলে ডাক্তার কুমিল্লায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠায়। আমি তাকে কুমিল্লায় নিয়ে যাই। সেখানে আবার ঢাকায় রেফার করলে যাওয়ার পথে কমলা মারা যায়।
এলাকাবাসী বলেন, কিছু দিন ধরে তাদের সাজানো সংসারে ঝড় বইছে। লোকমূখে নুরুর পরকীয়া কমলার কানে বাসা বাঁধলেই শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। যার রোষানলে কমলার আজ এই পরিনতি।
তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা উদঘাটন করে সনাক্তকৃত অপরাধীর কঠোর শাস্তির দাবি জানান তারা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুনছুর আহমেদ বিপ্লব, মোবাইল: ০১৬১৫৩৩৪৩৭৩, ইমেইল: manobkhabornews@gmail.com