জিসান আহমেদ নান্নু, কচুয়া ॥
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ৬০নং কোয়া কোর্ট মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক, শ্রীরামপুর গ্রামের অধিবাসী, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি দেওয়ান মো. ওয়াহিদুর রহমানের সুযোগ্য সন্তান, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি কচুয়া উপজেলা শাখার সভাপতি মো. ওমর খৈয়াম বাগদাদী রুমি কোভিড ১৯ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে সাধারন মানুষকে রক্ষা করতে জীবনের ঝুকি নিয়ে কচুয়ায় সর্বস্তরের জনসাধারণকে সচেতন করতে মাঠে কাজ যাচ্ছেন।
জানাগেছে, গুনী এ শিক্ষক মো. ওমর খৈয়াম বাগদাদী রুমি, কোভিড ১৯ করোনায় শুরু হওয়ার প্রথম দিকে কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপায়ন দাস শুভ’র উপিস্থিতিতে তিনি তাঁর নিজ কচুয়ার কোয়া কোর্ট মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কে করোনায় মোকাবেলায় সচেতনা সৃষ্টি করেন। পাশাপাশি নিজ গ্রাম শ্রীরামপুর মোহাম্মাদিয়া জামে মসজিদে ২ শ’৫০ জন মুসুল্লিদের নিজ উদ্যোগে মাস্ক ও হাত ধোয়ার সাবান বিতরন করেন। এবং এলাকায় রিসকা চালক,ভ্যান চালক, দেওয়ান বাড়ী, দারোগা বাড়ীতে অসহায় শতাধিক মানুষের মাঝে হ্যান্ড স্যানিটারিজ সামগ্রী বিতরন করেন।
চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাহাব উদ্দিনের নিদের্শে ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সহযোগিতায় দরিদ্র ৬৪ টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করেন। এছাড়া সরকারের নিদের্শে স্থানীয় উপকার ভোগীদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে নামের তালিকার তথ্য হাল নাগাদ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনা মোতাবেক সামাজিক যুব সংগঠন আলোর মশালের উপদেষ্টা হিসেবে প্রান্তিক গ্রামের অসহায়-দরিদ্র কৃষকদের ধান কেটে বাড়ী পৌঁছে দেন।
সম্প্রতি কচুয়ার দক্ষিন জনপদ রহিমানগর এলাকায় জেলা পরিষদ সদস্য মো. সালাউদ্দিন ভ্ূঁইয়ার সাথে গোহট গ্রামে সাধারন মানুষকে সচেতন করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন।
ইতিপূর্বে তিনি মহামারী করোনায় কচুয়া তথা অন্য উপজেলার কোন ব্যক্তি করোনায় মারা গেলে নিজস্ব এলাকায় দাফন করতে না পারলে তার নিজ পারিবারিক কবরস্থানে মৃত ব্যক্তিদের নিঃস্বার্থ ভাবে মানবতার কল্যানে জানাযাসহ দাফন কার্য করার ঘোষনা দিয়ে ব্যাপক আলোচিত হয়েছেন। তার এমন ব্যতিক্রমী সাহসী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই।
ওই সময় তিনি দু:খ প্রকাশ করে বলেন (২১এপ্রিল) কচুয়া উপজেলার গোহট দক্ষিন ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের অধিবাসী জনৈক মানিক নামে এক ব্যক্তি ঢাকায় বসবাসরত অবস্থায় করোনা সংক্রমনে মারা যাওয়ার পর তার লাশ বাড়িতে এনে দাফন করার কথা উঠলে গ্রামবাসীর প্রতিবাদের বিষয়টি আমার দৃষ্টি গোচর হয়। এতে তিনি বিষন ব্যাথিত হন। পরে তার বাবার সাথে আলোচনা করে তিনি মন থেকে এই উদ্যােগ গ্রহন করেন। তিনি আরো জানান, কেউ মারা গেলে তাকে নিজ ভূমিতে দাফন করতে দেয়া হবে না, এটা অত্যান্ত দু:খ জনক। পৃথিবীর যে, কোনো স্থানে করোনা আক্রান্ত কচুয়া উপজেলার কোনো হতভাগা ব্যক্তি মৃত্যু বরন করলে, আমার বাড়িতে এনে দাফন করতে চাইলে কেউ বাঁধা সৃষ্টি করলে আমি তার সকল দায়িত্ব নিয়ে আমাদের নিজ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করাবো।
স্কুল শিক্ষক রুমি বাগদাদী তার নিজের ফেসবুকে এমনি আবেগী স্ট্যার্টাস প্রকাশ করলে কচুয়াবাসী অনেকে এ মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানান। ইচ্ছা করলে এ বিষয়ে যে কেউ তারঁ ০১৮১৬-৬১৫৫১৩ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করছেন। এদিকে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় শিক্ষক নেতা মো. ওমর খৈয়াম রুমী কচুয়া বাজার, রহিমানগর বাজার, সাচার বাজার, শ্রীরামপুর বাজার, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও জনগুরুত্ব স্থানে নিজে মাইকিং করে মানুষকে অযথা বাহিরে ঘোরা-ফেরা না করে ঘরে থাকার আহবান জানান। পাশাপাশি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কচুয়া বড় সমজিদ, ঈদ গাঁ জামে মসজিদসহ একাধিক মসজিদের সামজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ পড়তে জোরালো বক্তব্য রাখেন। তিনি কচুয়া থানা প্রাঙ্গনে নিজে কাধে করে জীবানুনাশক স্প্রে করেন।
তিনি বলেন, আমি শিক্ষক পরিবারের সন্তান আমার মা স্কুল শিক্ষক, বোন ও স্ত্রী স্কুল শিক্ষক তাই নিজ উদ্যোগে আগামী ২৫ রমজানে ঈদ বোনাসের টাকা দিয়ে এলাকার হত-দরিদ্র মানুষদের সেমাই চিনি কেনে দিবো।
তিনি আরোন বলেন, মানব সেবাই মানুষের ধর্ম। যতদিন বাঁচতো ন্যায় ও সততার সাথে সাধারন মানুষের কল্যানে কাজ করে যাবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুনছুর আহমেদ বিপ্লব, মোবাইল: ০১৬১৫৩৩৪৩৭৩, ইমেইল: manobkhabornews@gmail.com