মনিরুল ইসলাম মনির :
মতলব উত্তর উপজেলার গজরা ইউনিয়নের গজরা বাজারে সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা করে গ্রাহকদের প্রায় ৪ কোটি টাকা নিয়ে সমবায় সমিতির মালিক নূরুল ইসলাম উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই এলাকার সাধারণ মানুষকে সমিতির গ্রাহক বানিয়ে তাদের কাছ থেকে নূরুল ইসলাম (৪৫) নামের এক প্রতারক প্রায় ৫ শতাধিক গ্রাহকের ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতারণার শিকার সমিতির এলাকার সদস্যরা নূরুল ইসলামকে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করে। অনেক খোঁজার পর না পেয়ে সমিতির এক সদস্য রুনিয়া বেগম তাহার বাড়িতে যায়, বাড়িতে গিয়ে দরজায় দেখা যায় বড় বড় দুটি তালা। এরপর একের পর এক সদস্য নূরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তালা দেখতে পায়। সমিতির গ্রাহক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলার গজরা ইউনিয়নের ডুবগী গ্রামের নূরুল ইসলাম পিতা সামেদ প্রধান এলাকায় ৭/৮ বছর আগে গ্রামে আইসক্রিম বিক্রি করত, পরে গাওয়াল ফেরিওয়ালা করত পরে রিকশা চালাতো, পরে গজরা বাজারে চায়ের দোকান চালাতো তারপর মুদি দোকান, এর পর আসলো সমবায় সমিতির এনজিও ব্যাবসা। গজরা বাজারে ছোট্ট একটি দোকান ভাড়া নিয়ে শুরু করে। দোকান নিয়ে সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের একটি সমবায় সমিতি রেজি নং. ৫৪ চাঁদ ১৩ খুলে গ্রাহকদের কাছ থেকে এফডিয়ার ডিপিএস বাৎসরিক সঞ্চয় টাকা আদায় করতে থাকে। এলাকার প্রবাসী ভাই বোনদের টাকা চাকরিজীবী অবসর প্রাপ্তদের টাকা জায়গা জমি বিক্রির টাকা তাহার এখানে এফডিয়ার করে রেখেছে ও মানুষকে নানান লোভ দেখিয়ে হাতিয়ে নিতে থাকে কোটি টাকা। এই টাকা দিয়ে সে ৫ তলা ফাউন্ডেশন বাড়ি নির্মান করে ও ঢাকাতে ও সে টাকা পাচার করে জায়গা জমি কিনেছে, তাহার সহযোগি সোরিয়া বেগম সেও দোতলা ফাউন্ডেশন বিল্ডিং বাড়ি নির্মান করে। সোরিয়া নামের সমিতির কর্মী ওই সমিতির নামে রশিদ বই ছাপিয়ে প্রতি সদস্যের কাছ থেকে ডিপোজিট করিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নূরুল ইসলামের কাছে দিতো। পরে সদস্যদের কাছে আস্থা অর্জন করে সদস্যদের বেশি মুনাফা দেয়ার কথা বলে একেক জনের কাছ থেকে বেশি অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। এতে সমিতির সদস্য সংখ্যা প্রায় পাঁচ শতাধিক হয়ে যায় ।
শুধু তাই নূরুল ইসলামের লালসার শিকার অসংখ্য নারী। অসংখ্য নারীকে আনন্দ মজা ফূর্তি করতো অসংখ্য নারীকে লোভ দেখিয়ে ভোগ করেছে সে। সদস্যের কাছ থেকে প্রতি মাসে মুনাফা বেশি দেয়ার লোভ দেখিয়ে কারও কাছ থেকে দেড় লাখ, কারও কাছ ৩ লাখ, ৪ লাখ, ৫ লাখ আবার কারও কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা, কারও কাছ ১৪ লাখ পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়। সমিতির সদস্যদের ভাষ্যমতে, এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক সদস্যের কাছ থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গত ১৩ মার্চ রাত্রের আধাঁরে সপরিবার নিয়ে পালিয়ে যায়। ৩ দিন পর্যন্ত এলাকায় ফিরে না আসায় এবং অফিস না খোলার কারণে টাকা দেয়া সদস্যদের টনক নড়ে যে, নূরুল ইসলাম এলাকার বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে। ওই এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক লোকের প্রায় ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে। তাকে চারদিকে খোঁজ খবর নেওয়া অব্যাহত আছে।