গাজী মমিন, ফরিদগঞ্জ:
সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি নবগঠিত যুবলীগ ফরিদগঞ্জ উপজেলা কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, অতীতে যুবলীগকে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা হয়েছে, আমি তা করবো না। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ফরিদগঞ্জ থেকে বদলী হওয়া ইউএনও আলী আফরোজ ওসিকে দিয়ে যুবলীগ নেতাদের চিঠি দিলেন, এ মাঠে যুবলীগ এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান করা যাবে না। তিনি কেনো এটা করলেন বুঝতে পারছি না। সম্ভবত এখান থেকে যাবার আগে একটা অপকর্ম করতে চেয়েছিলেন, পারেননি। তিনি বলেন, ‘উপজেলা কমপ্লেক্সে অন্য কারও জায়গা হবে না’ বলে এই ফরিদগঞ্জে এক ভদ্রলোক ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন, ফরিদগঞ্জে কোথাও যেতে হলে কারও পারমিশন নিতে হবে, আমি হাসলাম। ওরা বোকার স্বর্গে বাস করে। গত কয়েক মাসে চাঁদপুরে কয়েক জনের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে ফোনে বললাম- আপনার সামনে নিরীহ লোকদের পেটানো হচ্ছে। তিনি বললেন, এটা আপনাদের রাজনীতির ব্যপার। ওই অফিসারকে ‘বুদ্ধিহীন’ ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারিনি। তিনি একজনকে ইঙ্গীত করে বলেন, ওই ব্যক্তি হাজার কোটি টাকার মালিক। চাঁদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে তার কতো সম্পদ গড়ে তুলেছেন, দেখেন। আমি করলে আমাকে প্রশ্ন করবেন। নিজের প্রতি সমালোচনার জবাবে বলেন, সাম্প্রতিককালে সারা দেশে ২৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও হয়েছে। এর মধ্যে রাজাকার ও তাদের দোসরদের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ করলাম, একদল বিরোধীতা করলো। ফরিদগঞ্জে সে স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিষ্ঠান এমপিও হলো কিভাবে। এ বিষয়ে আমি প্রত্রিকায় আর্টিকেল লিখেছিলাম, এটা কি আমার অন্যায়। নিশ্চয় ওই বিরোধীদের ভেতর থাকা সাইনবোর্ডধারীরা এ কাজ করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, একদল লোক আমাদের নেতাদের চরিত্র নিয়ে টানাহেঁচড়া করছে। তারা পরাজিত হয়ে এমনটা করছে এবং আমাদেরকে তাদের কাতারে নামাতে চায়। আমরা তাদের চিহ্নিত করবো, যাতে তারা আমাদেরকে ভুল পথে নিতে না পারে। যুবলীগের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল সোমবার বিকালে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনের মাঠে যুবলীগ ফরিদগঞ্জ উপজেলা শাখা এ সমাবেশের আয়োজন করে। তিনি আরও বলেন, শেখ ফজলুল হক মণি ভাই ছিলেন অসম্ভব মেধার অধিকারী, সাহসী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। যাঁর নেতৃত্বে যুব সমাজ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। মোনায়েম খাঁকে ঢাবিতে ঢুকতে না দেওয়ায়, তাঁর মাস্টার ডিগ্রী কেড়ে নেয়া হয়েছিলো। কিন্তু, তিনি অন্যায়ের কাছে কোনোদিন মাথা নত করেননি। এক শ্রেণির ছাত্ররা যখন লম্বা চুল রেখে গাঁজা সেবন শুরু করেছিলো, তখনই সাহসী মণি ভাই যুবলীগ গঠন করেছেন। ক্রাইসিস মূহুর্তে তিনি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন। কলংকিত ১৫ই আগস্টে সবার আগে মণি ভাইয়ের বুকে গুলি করা হয়েছিলো। আজকের যুব সমাজকে তাঁর মতো মেধাবী, সাহসী ও দেশ প্রেমিক হতে হবে। যুবলীগ ফরিদগঞ্জ উপজেলা শাখার নব গঠিত কমিটির আহবায়ক আবু সুফিয়ান এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন আহমেদ এর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন যুবলীগ চাঁদপুর জেলা শাখার আহবায়ক মিজানুর রহমান কালু ভুইয়া। বিশেষ বক্তা ছিলেন চাঁদপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক সালাউদ্দিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগ ফরিদগঞ্জ পৌর শাখার সভাপতি ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন রতন, সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র মাহফুজুল হক, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ কমিটির ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক খাজে আহম্মদ মজুমদার, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ এর ভাইস ছেয়ারম্যান (সংরক্ষিত) মাজুদা বেগম, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান সাউদ, যুবলীগ ফরিদগঞ্জ উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি বিল্লাল হোসেন, বর্তমান কমিটির সদস্য পাবেল পাটওয়ারী, বাহাউদ্দিন বাহার, মাসুদ আলম আয়াত, আল আমিন, গাফফার আহমেদ সজিব প্রমুখ। এদিকে, বেলা তিন ঘটিকা হতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও এলাকা থেকে সমাবেশস্থলে মিছিল ব্যানার সহযোগে যুবলীগ নেতা কর্মী ও সমর্থকরা সমাবেশে অংশ গ্রহণ করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুনছুর আহমেদ বিপ্লব, মোবাইল: ০১৬১৫৩৩৪৩৭৩, ইমেইল: manobkhabornews@gmail.com