শফিকুল ইসলাম রিংকু:
চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানায় রোজার ঈদের সুযোগ নিয়ে বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানীর লাইসেন্সকৃত ঠিকাদাররা। বেশ কয়েকটি অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রতিমাসে বিল যাচ্ছে ঠিকাদারদের হাত হয়ে। বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানীর কর্মকর্তাদের পকেটে।
সাধারণ গ্রাহকরা জানান, ২৯ এপ্রিল ২০১৯ইং তারিখে দৈনিক আওয়ার বাংলাদেশ পত্রিকার রিপোর্টের ভিত্তিতে বাখরবাদ গ্যাস কোম্পানীর সহকারী ব্যবস্থাপক এর নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান চালিয়ে বকেয়া বিলের কারণে বেশ কিছু লাইন বিচ্ছিন্ন করেন। পাশাপাশি কিছু জায়গাতে বাখারাবাদ গ্যাস কর্মকর্তাাদের যোগসাজসে লাইন বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি নতুন রাইজার দিয়ে অবৈধ লাইনের সংযোগ দেন।
সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়ে সহকারী ব্যাবস্থাপক তিনটি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধ্য হন। যার ধারাবাহিকতা ধরে ৩০ এপ্রিল ২০১৯ইং তারিখে দৈনিক ভোরের সময় পত্রিকায় একটি রিপোর্ট করা হয়।
সহকারী ব্যাবস্থাপক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অবৈধ গ্যাস সংযোগকারী ঠিকাদারদের লাইসেন্স বাতিল করে তাঁদেরকে (ঠিকাদার) আইনের আওতায় আনা হবে। কিন্তু কথায় আছে (সরিষার ভূত) কোনো ওঝা দ্বারা নামানো যায় না।
তেমনটাই হচ্ছে মতলব দক্ষিণ থানায়। গোপন সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, সহকারী ব্যবস্থাপক এর আত্মীয় ঠিকাদার হওয়ায় সব আইন পাশ কাটিয়ে রমরমা অবৈধ গ্যাস সংযোগরে ব্যবসা করে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে ঠিকাদার ফিরোজ দক্ষিণ বাইশপুর ও বরদিয়া আড়ং সংলগ্ন বেশ কিছু বাড়িতে অবৈধ গ্যাসং সংযোগ দিয়েছে। কোনো অংশে উত্তর বাইশপুরের ক্ষুদে ঠিাকাদার হুমায়ুন সাহেব পিছিয়ে নেই। বাখারবাদ গ্যাস কোম্পানির ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, অবৈধ সংযোগ দেওয়া কোনো অংশে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ থানা পিছিয়ে নেই।
অবৈধ গ্যাস সংযোগের গ্রাহকদের হাত থেকে প্রতি মাসে ন্যায্য বিল ঠিকাদাররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কালেকশান করছেন। গ্যাস কর্মকর্তারা এই অবৈধ সংযোগের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগের টাকা দিয়ে বড় বড় অট্টলিখায় ব্যয়বহুল জীবন-যাপন করছেন।
চাঁদপুর বাখরাবাদ গ্যাস কর্মকর্তাদের ব্যায়বহুল জীবনযাপনের তথ্য সংগ্রহ ও ধারাবহিক রিপোর্ট খুব শিগ্রহী তুলে ধরা হবে। এইদিকে বকেয়া বিলের কারণে যাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে (গ্রাহকদের) অভিযোগ সহকারি ব্যবস্থাপক আমাদেরকে একদিন সময় না দিয়ে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে।
পাশের বাড়িতে নতুন রাইজার দিয়ে ঠিকাদার ফিরোজের মাধ্যমে নতুন সংযোগ দেন। এই সংযোগ কিভাবে দিচ্ছেন তারা। যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ করা হয়েছে, সেখানে সরকারকে তোয়ক্কা না করে চাঁদপুর বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানীর সহকারী ব্যবস্থাপক ও ঠিকাদার ফিরোজ নতুন রাইজার দিয়ে গ্যাস সংযোগ দিচ্ছে।
যাদের অবৈধ সংযোগ কাটা হয়েছিলো তাঁদেরকেও সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদাররা বরাবরের মতো গ্যাস কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় আইনের হাত থেকে পার পেয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। আমরা সাধারণ জনগন আর কতদিন দেখবো রমরমা অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবসা। তাদেরকে (ঠিকাদার) কিছু বলা যাচ্ছে না। কিছু বলার আগে উল্টো আইনের ভয় দেখায় (সাধারণ জনগন) আমাদেরকে।
গ্যাস বই দেখিয়ে গ্যাস সংযোগের জন্য আকৃষ্ট করে সাধারণ জনগনকে, বোকা বানিয়ে অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। যেখানে গ্যাস সংযোগ বন্ধ সেইখানে ঠিকাদাররা নতুন গ্যাস বিলের বই সাধারণ জনগনকে কিভাবে দেখায়।
গ্যাস কর্মকর্তারা সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ঠিকাদারদের বানিয়ে তুলছে অপরাধ জগতের আরও একটি চক্র। যাদের আধিপত্য বিস্তার হচ্ছে অবৈধ টাকা দিয়ে। ঠিাকাদারদের অবৈধ গ্যাস সংযোগের টাকার দাপটে যেন রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে গ্যাস জগতে চরে বেরাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, গ্যাস জ্বালানী মন্ত্রণালয়, বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি অকর্ষণ অবৈধ সংযোগের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিয়ে অসাধু গ্যাস কর্মকর্তা ঠিকাদারদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে দেশের মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করা হোক।