সফিকুল ইসলাম রিংকু:
মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিনে ছেয়ে গেছে। মাছ, মাংস, ডিম, তরকারি, পান-সুপারী, ফল, মিষ্টি ও মনোহারীসহ প্রতিটি দোকানে পণ্য বেচা-কেনায় প্রকাশ্যে ব্যবহার হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ। প্রশাসনের যথাযথ তদারকি না থাকায় শুধু উপজেলা শহরেই নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবাদে বিক্রি হচ্ছে এই ব্যাগ।
জানা যায়, চলতি বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট এবং জনস্বাস্থ্যের প্রতি হুমকির জন্য আলোচনায় ছিল প্লাস্টিক। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ৬(ক) (সংশোধিত ২০০২) ধারার প্রদত্ত ক্ষমতা বলে ঘোষিত সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ‘যে কোন প্রকার পলিথিন অর্থাৎ পলিথাইলন, পলিপ্রপাইলিন বা উহার কোন যৌগ বা মিশ্রণের তৈরি কোন ব্যাগ, ঠোঙা বা যে কোন ধারন উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাতকরণ বিক্রি ও বিক্রির জন্য প্রদর্শন, মজুত ও বিতরণ নিষিদ্ধি করে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, দোকান থেকে দেয়া বিভিন্ন পণ্য বহনের জন্য এসব পলিথিন ব্যাগ মানুষ ঘরের ময়লা ফেলার কাজে ব্যবহার করছে। এসব ব্যাগ আস্তাকুড় বাড়ির আশপাশের খোলা জায়গা ও যত্রতত্র ফেলা হয়। যেহেতু পলিথিন নষ্ট হয়ে মাটি ও পানিতে মিলে যায় না সেহেতেু এতে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। পলিথিন ব্যাগের বিকল্প হিসেবে কাগজের ঠোঙা, চটের ব্যাগ ইত্যাদি রয়েছে। কিন্তু পলিথিন ব্যাগ সহজলভ্য হওয়ায় ওই সকল ব্যাগের প্রতি মানুষের আগ্রহ কম।
সরেজমিনে দেখা যায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলার মতলব বাজার, নারায়ণপুর, নায়েরগাঁও, মুন্সিরহাট বাজার উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাজারগুলোতে অবাদে পলিথিনের ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে। অথচ প্রশাসন এ দিকে কোনো দৃষ্টি দিচ্ছে না। সেই সাথে নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে পরিচালিত হচ্ছে না কোনো অভিযান। ফলে এসব ব্যবসায়ীরা নিজের ইচ্ছা মতো নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
মতলব শহরের বাসিন্দা রায়হান জানান, বাজার থেকে কোন কিছু কিনলে দোকানদাররা পলিথিনের ব্যাগের ভরে দেয়। এ ক্ষেত্রে তারা নিরুপায়। মতলব বাজারের মুদি ব্যবসায়ী নারায়ন সাহা জানান, কাগজের ঠোঙা ও চটের ব্যাগের দাম অনেক বেশি। অনেক ক্রেতা বাজারে ব্যাগ নিয়ে আসে না। আনলেও মালামাল আলাদা আলাদা করে দিতে হয়। যদি তা না করি তাহলে ক্রেতা পণ্য কিনতে চায় না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মতলব বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, মতলবের মাছ বাজারের দোকানদার সুব্রত সাহা, মুড়ি বিক্রেতা শিবু, শংকর সাহা, দিলীপ সাহা, মোবারক স্টোরের মালিক মোবারক হোসেন, ফল বিক্রেতা কাউছার, মুরগি বিক্রেতা শরীফ, পূর্ব বাজারের ভুষা মালের ব্যবসায়ী ফজলার দোকানে পাইকারি দরে এ সকল নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রি হচ্ছে।
মতলব বাজারের মুড়ির দোকানদার শিবু সাহা বলেন, কারা বিক্রি করে তা দিয়ে কি দরকার, সবার সাথে কথা বলে ম্যানেজ হয়ে যায়। আমরা তো আপনাদের সুবিধার জন্য পলিথিন বিক্রি করি।
নিষিদ্ধ পলিথিনের বাজারজাত ও মজুদের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহিদুল ইসলাম বলেন, শীঘ্রই এ ব্যাপারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।