মাদ্রাসার মাহিলা প্রভাষকের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের অশ্লীল কথায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি গতকাল ৯ এপ্রিল মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার ভোলদিঘী ফাজিল মাদ্রাসায় ঘটে। ঘটনা সুত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে পদার্থ বিজ্ঞানের প্রভাষক হাজেরা আক্তার শ্রেণী কক্ষে পাঠ দান করছিলেন। পাঠদান শেষে শিক্ষক কমন রুমে আসলে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মাওঃ দেলোয়ার হোসাইন অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন। ঘটনায় মৌখিক শ্লীলতাহানীর কারনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভসহ অধ্যক্ষকে তার নিজ কক্ষে এক ঘন্টাকাল অবরুদ্ধ করে।
ঘটনাটি নিয়ন্ত্রনে আনতে শাহরাস্তি মডেল থানার এসআই নজরুল ইসলাম ও উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মেহানী মীরা মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন এবং ঘটনা নিয়ন্ত্রনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এবিষয়ে প্রভাষক হাজেরা আক্তার বলেন, সহকারী প্রভাষক মোঃ বিল্লাল হোসেন আমাকে ডেকে বলেন, আমি যেন শ্রেণি কক্ষের সেমিনার টেবিলে পেট ঠেকিয়ে পাঠদান না করি এবং তলপেট ভারী হয়ে গেলে যেন অধ্যক্ষের সাথে দেখা করি। ওই সময় সহকারী প্রভাষক মোঃ বিল্লাল হোসেন এটা অধ্যক্ষের ম্যাসেজ বলে জানান। অধ্যক্ষের বাহক এমন অশালীন কথাগুলো বলার সময় কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগন ছিলেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, অতিতেও অধ্যক্ষের এধরনের কাজ করেছেন। বহুবার তিনি ক্ষমা চেয়ে পার পেয়েছেন।
এমন অসামাজিক আচরণ ও অশ্লীল বক্তব্য ভবিষ্যতে না করার জন্য এবার আমি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো। নিজের ও চাকুরীর নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় আশংকা রয়েছে বলে তিনি জানান। অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মাওঃ দেলোয়ার হোসাইন বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানে স্বার্থে শিক্ষকদের সাথে এমন আচরণ করি। শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়নে মাঝে মধ্যে শিক্ষার্থীদের সাথে এমন আচরণ করতে বাধ্য হই। আমার সাথে প্রভাষক হাজেরা আক্তারের ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই। এমন আচরণের জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। অধ্যক্ষের বার্তা বাহক সহকারী প্রভাষক মোঃ বিল্লাল হোসেন বলেন, অধ্যক্ষ সাহেব আমাকে ডেকে পদার্থ বিজ্ঞানের প্রভাষক হাজেরা আক্তারকে একটি অশ্লীল ম্যাসেজ পৌঁছাতে বলেন যা আমি ওনার নির্দেশক্রমে ম্যাসেজটি পৌঁছে দেই।
শিক্ষার্থীরা জানায়, অধ্যক্ষ মাওঃ দেলোয়ার হোসাইন প্রায় দিন মেয়ে শিক্ষার্থীদের মেয়ালী ভাষায় গালমন্দ করেন আর ছেলেদের মা-বোন নিয়ে গালি দেন। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে ক্লাসে প্রবেশ করে বেদম প্রহার করেন। বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা প্রিন্সিপলের অপসারণ দাবি করেন। এলাকাবাসী বলেন, আর কত? এভাবে অধ্যক্ষ বহুবার করেছেন। ওনার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তার কাছে মা-বোন, মেয়ে নেই। সবার সাথে অশ্লীল ভাষায় অসামাজিক আচরণ করেন তিনি। এধরনের ঘটনা তিনি আরও ঘটিয়েছেন। অর্থ কেলেংকারীসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। সমাজের সুশীল ব্যক্তিগন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কারনে মুখ বন্ধ করে আছেন। এবার সময় এসেছে দূর্নীতিবাজ অধ্যক্ষকে অপসারণ করার। শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী অদক্ষ, অবিচারী, অর্থ কেলেংকারী, অসামাজিক আচরণকারী ব্যক্তিকে দ্রুত অপসারণ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় প্রাণের দাবি জানান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুনছুর আহমেদ বিপ্লব, মোবাইল: ০১৬১৫৩৩৪৩৭৩, ইমেইল: manobkhabornews@gmail.com