স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি জোট নির্বাচন করে যদি কে সরকারপ্রধান হবে তা দেখাতে না পারে, যারা জয়ী হতে পারতো নমিনেশন বাণিজ্যের কারণে তাদের নমিনেশন না দেয়া, দলের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারপারসন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হয়- তাহলে মানুষ কী দেখে তাদের ভোট দেবে? বাণিজ্য করতে গিয়ে তাদের সব চলে গেছে।
সোমবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনা ও সংসদের প্রথম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ সংসদে বিরোধী দল যথেষ্ট সময় পায়। প্রতিটি বিলের ওপর সংশোধনী আনে, বক্তব্য রাখে। এমন রেকর্ডও আছে একটি বিলের ওপর সংশোধনী আনে, আমরা এগুলোর ওপর গুরুত্ব দেই।
তিনি বলেন, এবার ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে এসেছিল। কিন্তু নির্বাচনে তাদের পছন্দমতো সংখ্যায় সিট পায়নি। ২০০৮ এ নির্বাচন হয়েছিল সেই নির্বাচনে ৮৪ ভাগ ভোট পড়েছিল। এবার ২০১৮ এর নির্বাচনে ভোট সংখ্যা ৮০ ভাগ। আর সে সময় বিএনপি-জামায়াত জোট মিলে মাত্র ৮টি সিট পেয়েছিল। এবারে নির্বাচন তারা কীভাবে করেছে সেটাই হলো প্রশ্ন।
শেখ হাসিনা বলেন, ঐক্যফ্রন্টের যাকে নেতা বানিয়েছেন তিনি নিজেই নির্বাচন করেননি। তাছাড়া বিএনপির সাবেক চেয়ারপারসন একজন দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আরেকজন দুনীতি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ খুন, মানি লন্ডারিং- যা আন্তর্জাতিকভাবে খবর বেরিয়েছে এগুলোর কারণে পলাতক। সাজাপ্রাপ্ত একটা আসামি দেশে থাকে না, তাকে বানালো তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন। যে দেলের চেয়ারপারসন একজন সাজাপ্রাপ্ত আরেকজন দেশান্তর তাদেরকে জনগণ যে ভোট দেবে কী দেখে দেবে? কারণ তারা যে ঐক্যফ্রান্ট করছে তারাতো দেখাতে পারেনি কে সরকারপ্রধান হবে, কে রাষ্ট্রপ্রধান হবে। জনগণ যখন সেটা পায়নি তাই আমাদেরকে বেছে নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের আরেকটি বিষয় হচ্ছে তারা নমিশন নিয়ে বাণিজ্য করেছে। মানুষ যদি দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যায়, ভোট দেবে কীভাবে। নির্বাচন যখন শুরু হলো তারা নির্বাচন ভয়কট করলো। কেন বয়কট করল? সেনাবাহিনী চেয়েছিল। তাও দেয়া হলো। দেয়ার পর তারা আরও গোসসা করলো। তারা তাহলে কী চেয়েছিল?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সংবিধান দিয়েছিলেন সেই সংবিধানের আলোকে প্রথম নির্বাচন হয়েছিল। অন্যান্য দল মিলে ৯টি সিট পেয়েছিল। আওয়ামী লীগই সব সিট পেয়েছিল। কিন্তু এরপর যে নির্বাচন হয়েছে সেই নির্বাচন কাদের অধীনে হয়েছে? জাতির পিতাকে হত্যার পর যাকে সেনাপ্রধান করা হলো তিনি খুনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত। তিনি একাধারে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে গেলেন। ক্ষমতায় বসে ক্ষমতায় বসে যে নির্বাচন সে নির্বাচন কী হলো। ৩৯টা সিট দিল আওয়ামী লীগকে। এভাবে প্রতিটি নির্বাচন নিয়ে তো এভাবেই খেলা ছিল। অন্তত এইটুকু বলতে পারি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আজকে যে স্বচ্চ বক্স, ব্যালট পেপার এই নির্বাচনের সুযোগ আমরা করেছি। এই দেশে নির্বাচনের যে চিত্র কথাই ছিল ‘১০টা হোন্ডা ২০টা গুন্ডা নির্বাচন ঠান্ডা’। কারও ভোট দেয়ার দরকার ছিল না। অন্তত সে ধরনের ঘটনা তো ঘটতে পারেনি। ৪০ হাজারের মতো ভোটকেন্দ্র। তার মধ্যে কয়েকটি কেন্দ্রে বাতিল ছিল। ২৮টির মতো।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা যে, একটি জোট একটি দল নির্বাচন করে যদি কে সরকারপ্রধান তা দেখাতে না পারে, যারা জয়ী হতে পারতো অনেককে বিএনপি নমিনেশন দেয়নি। তাদের অনেকে আমাদের অফিসে চলে এসে দুঃখের কথা বলেও গেছে। অনেক প্রার্থী ছিল তারা জয়ী হয়ে আসতে পারতো বিএনপি তাদের নমিশন নেয়নি। বাণিজ্য করতে গিয়ে তাদের সব চলে গেছে। তারপর একজন সদস্য তাদের বাধা অমান্য করে জনগণের মর্যাদা রক্ষা করে সংসদে এসে বসেছেন। আমি আশাকরি যারা অন্তত জনগণের ভোট পেয়েছেন তারা সংসদে এসে জনগণের কথা বলুক। তাদের যা যা বলার বলুক। কথা বলতে আমরা বাধা দেব না। বাধা আমরা বাধা পেয়েছি। এমনও হয়েছে ৭২ বার আমার মাইক অফ করে দিয়েছে। আমরা কিন্তু তা করি না করবও না। এটাই হলো বাস্তবতা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুনছুর আহমেদ বিপ্লব, মোবাইল: ০১৬১৫৩৩৪৩৭৩, ইমেইল: manobkhabornews@gmail.com