বিশেষ প্রতিনিধি:
করোনা উচ্চ সংক্রমিত এলাকার লকডাউন চলায় ১৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসঙ্গে করোনা মহামারি ও বন্যার কারণে ঢাকা-১৪, সিলেট- ৩ ও কুমিল্লা- ৫ আসনের উপনির্বাচনসহ ৯ টি পৌরভোটও পিছিয়ে দিল কমিশন। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে কমিশনের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে খুলনা বিভাগের সবগুলোসহ ১৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট আপাতত হচ্ছে না। খুলনা বিভাগ ছাড়াও চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং নোয়াখালী জেলার ইউপি ভোট স্থগিত করা হয়েছে। তবে অন্য ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচন ২১ জুন হবে।
এ ছাড়া ২১ জুন অনুষ্ঠেয় ১১টি পৌরসভার মধ্যে দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ ও ঝালকাঠি সদর বাদে বাকি ৯টির ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার জানান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে আইইডিসিআর’র করোনা বিষয়ক পত্রের বিষয়ে পর্যালোচনা, মাঠ প্রশাসনের মতামত এবং আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের থেকে মতামত নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
তিনি বলেন, ২১ জুন নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত ৩৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে করোনার উচ্চঝুঁকি সম্পন্ন এলাকা খুলনা বিভাগের সকল ইউনিয়ন পরিষদ, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার ইউনিয়ন পরিষদসহ মোট ১৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাগেরহাট জেলায় ৬৮টি, খুলনা জেলায় ৩৪টি, সাতক্ষীরা জেলায় ২১টি, নোয়াখালী জেলায় ১৩টি, চট্টগ্রাম জেলায় ১২টি এবং কক্সবাজার জেলায় ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ।
ইসি সচিব জানান, যেহেতু বরিশাল বিভাগের সংক্রমণের হার সহনীয় পর্যায়ে আছে বরিশাল বিভাগের সব নির্বাচন ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে আগামী ১৪ জুলাই অনুষ্ঠেয় সংসদীয় তিনটি আসনের উপ-নির্বাচনের তফসিল আংশিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন তফসিল অনুযায়ী ভোটগ্রহণের তারিখ ১৪ দিন পিছিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ জুলাই।
স্থগিত ৩৭১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন গত ১১ এপ্রিল অনুষ্ঠানের কথা ছিলো। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভোটগ্রহণের কয়েকদিন আগে ১ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন এসব ইউপির ভোট স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে তিন দফায় কমিশন সভা শেষে ২ জুন নতুন করে তারিখ ঘোষণা করে। নতুন তারিখ অনুযায়ী আগামী ২১ জুন এসব ইউনিয়ন পরিষদে ভোট গ্রহণের কথা ছিলো। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে ২১ জুন ২০৪টি ইউপির ভোট হতে যাচ্ছে। অবশ্য প্রার্থী মারা যাওয়ার কারণে আগেই চারটি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট ২১ জুনের পরিবর্তে ১৪ জুলাই পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
ইসির যুগ্ম সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ বেশ কিছু অঞ্চলে লকডাইনে চলে গেছে। সেখানকার জেলাপ্রশাসনসহ প্রার্থীরা এমতাবস্থায় ভোট না নেবার অনুরোধ জানিয়ে সিইসি বরাবর চিঠি দেন। তাছাড়া কিছু অঞ্চলে বন্যা হচ্ছে, এসব অঞ্চলে প্রচারের প্রতিকুল পরিস্থতি বিবেচনায় নিয়ে বৃহষ্পতিবার সকালে সিইসির উপস্থিতিতে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। পরিস্থিতি ভালো হলে পূনরায় তফসিল দেবে ইসি। তবে লক্ষীপুর ২ ‘উপনির্বাচন এমাসে না করলে সংবিধান লঙ্ঘন হবে। সেজন্য এ উপনির্বাচন আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবে। ফলে আগামী ২১ জুন ২০৪টি ইউপি, ২টি পৌরসভা ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের ভোটগ্রহণ করবে ইসি।