সফিকুল ইসলাম রিংকু:-
সরকার প্রথম শ্রেনী থেকে শুরু করে দশম শ্রেনী পর্যন্ত বিনামূল্যে বই বিতরন করছে। প্রথম শ্রেনী থেকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত নোট বই মুদ্রণ, বাঁধাই, আমদানি, বিতরণ ও বিক্রির সরকারি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করেই, বইয়ের দোকানগুলোতে চলছে নোট এবং গাইড বইয়ের অবৈধ রমরমা ব্যাবসা।
মতলব দঃ উপজেলার, কিল্ডার গার্ডেন, প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে নিষিদ্ধ নোট ও গাইড বইয়ের রমরমা ব্যবসা চলছে !! সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে, বিদ্যালয়ের কিছু অসাধু শিক্ষকের নির্দেশে শিক্ষার্থীরা এসব নিম্নমানের গাইড বই কিনতে বাধ্য হচ্ছে। প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নোট বই মুদ্রণ, বাঁধাই, আমদানি, বিতরণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ এবং আইন অমান্যকারীদের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। সচেতন মহলের লোকজন প্রশাসনের নিরব ভূমিকাকেই এ জন্য দায়ী করছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগে জানা গেছে, মতলব দঃ উপজেলার সকল বিদ্যালয়ের কাছাকাছি, গড়ে উঠা সব বইয়ের দোকানেই, দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণির নিষিদ্ধ নোট ও গাইড বইয়ে সয়লাব হয়ে গেছে। এসব দোকানে বিভিন্ন প্রকাশনীর নোট এবং গাইড বিক্রি হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার প্রসিদ্ধ স্কুল ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাসেই শিক্ষার্থীদেরকে, অসাধু কিছু শিক্ষক তাদের পছন্দের প্রকাশনীর গাইড বই কিনতে উদ্বুদ্ধ করছেন। উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের অভিভাবক স্বপন মিয়া জানান, গত বছর তার সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলের জন্য বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কথা মতো গাইড বই কিনতে ৭৫০ টাকা লেগেছে।
বই প্রকাশনী থেকে নিযুক্ত প্রতিনিধির সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষক নেতাদের বিশেষ সখ্যতার বিনিময়ে নিষিদ্ধ গাইড বইয়ের ব্যাবসা পরিচালনা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সৃজনশীল ও অনুশীলনমূলক বইয়ের নামে নিষিদ্ধ নোট ও গাইড বই কিনতে অভিভাবকদের বাধ্য করে, মুনাফা লুটছে একটি অসাধু চক্র। প্রকাশ্যে এ ধরনের বই দোকানে বিক্রি হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেদিকে কোনও নজর নেই। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল হক মোল্লা বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কিল্ডার গার্ডেনের শিক্ষার্থীদের নোট বা গাইড বই কিনতে কেউ বাধ্য করতে পারবে না।
আইনত এসব নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আঃ রহিম খাঁন বলেন, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সব ধরনের নোট বা গাইড বই নিষিদ্ধ। তাই যে কোনও মুল্যেই হোক এ ধরনের গাইড বইয়ের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। কোনও স্কুল কর্তৃপক্ষ বা শিক্ষকরা গাইড বইয়ের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।